অবশেষে চাকরি পেয়েছেন ‘শুধুমাত্র দুবেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাই’ বিজ্ঞাপন সাঁটিয়ে নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হওয়া বগুড়ার মো. আলমগীর কবির।
তাকে চাকরি দিয়েছে এসিআই লজিস্টিক লিমিটেড।
প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসিরের পক্ষে আলমগীরের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন চেইন শপ স্বপ্নের পরিচালক সামসুদ্দোহা শিমুল।
বগুড়ার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নিয়োগপত্র তুলে দেয়া হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী।
এর আগে বেলা ১২টার দিকে আলমগীর কবির বগুড়া জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যান। সেখানে প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে আলমগীরের সঙ্গে আলাপ করেন এসপি সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী।
এ সময় তার কাছে থেকে বিস্তারিত কথাবার্তা শোনেন তিনি।
এসপি সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী জানান, আলমগীর কবিরের সাথে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেছি। তিনি তার হতদরিদ্র পরিবারের শোচনীয় অবস্থার কথা জানিয়েছেন। তিনি কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে এই বিজ্ঞাপন দিয়েছেন বলে মনে হয়নি। কথা বলে মনে হয়েছে তার চাকরি আসলেই প্রয়োজন। তবে ওই ধরনের বিজ্ঞাপন দেওয়া হীন মানসিকতার পরিচয়।
এসপি বলেন, তার সম্পর্কে সংগৃহীত গোয়েন্দা তথ্যে কোনো অপরাধ কর্মকাণ্ডের প্রমাণ মেলেনি। তবে আলমগীরের মুঠোফোনের কলরেকর্ডসহ সবকিছু তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, আলমগীর কবিরকে চাকরি দেয়ার জন্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আমার মাধ্যমে যোগাযোগ করে। আলমগীরকে বেকারত্বের হতাশা থেকে মুক্তি দিতে একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে। আপাতত প্রতি মাসে ১৮ হাজার টাকা বেতন-ভাতা পাবেন তিনি। তা দিয়ে অনায়াসে ঢাকায় থাকা খাওয়া, হাতখরচ ছাড়াও কিছু অর্থ বাড়িতে পরিবারের কাছে পাঠাতে পারবেন।
আলমগীর কবির বলেন, কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের খবরে বলা হয়, পুলিশ আমাকে খুঁজে পাচ্ছে না। পরে আমি নিজেই পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করি। এরপর এসপিসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কয়েক ঘণ্টা নানা বিষয়ে আমার সঙ্গে কথা বলেন। সব জেনে এসপি স্যার চাকরির প্রস্তাব দেন।
আরও পড়ুন: ফেসবুক লাইভে এসে মাথায় গুলি চালিয়ে নায়ক রিয়াজের শ্বশুরের আত্মহত্যা
বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করা আলমগীর কবির ‘ শুধুমাত্র দুবেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাই’ ও নিজেকে বেকার পরিচয় দিয়ে শহরের জহুরুলনগরের বাড়ির দেয়াল ও বিদ্যুতের খুঁটিতে কয়েকটি বিজ্ঞাপন সাঁটান। এরপর এগুলো নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।
আলমগীর কবিরের বাড়ি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের বুড়ইল গ্রামে।
সে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আজিজুল হক কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অর্জন করেন।
পরে স্নাতকোত্তর পরীক্ষাতেও ভালো করেন তিনি।
শেষে নানা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও তিনি চাকরি পাচ্ছিলেন না।