নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২৯ জানুয়ারি, ২০২২ ৩:৪১ : অপরাহ্ণ
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে ‘খলনায়ক’ আখ্যা দিয়ে পাল্টা জবাব দিয়েছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।
নূরুল হুদার মতো লোককে সিইসি নিয়োগ দেওয়াকেও দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
আজ শনিবার ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের বিরুদ্ধে কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ করেন।
এ সময় সিইসি নির্বাচন কমিশনে বদিউল আলমকে কাজ দেয়ায় সাবেক সিইসি শামসুল হুদার সমালোচনা করেন।
এসব অভিযোগের জবাব দিতে ভার্চুয়াল এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সুজন।
সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য, খল চরিত্রের এক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) পেয়েছে জাতি। সিইসি আদালতের অজুহাত দিচ্ছেন কিন্তু ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আদালতে ৭০টির মতো মামলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত একটি মামলারও শুনানি হয়নি।’
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘টিআইবির ৫০টি আসনের গবেষণায় যে অভিযোগ করা হয়েছিল সেটিও তদন্ত করা যেতে পারতো, তাতে রাতের ভোট সংক্রান্ত অভিযোগ খণ্ডানোর সুযোগ ছিল। সুষ্ঠু নির্বাচনের খাতিরে অনেক অভিযোগ উঠেছে যেগুলো নির্বাচন কমিশন তদন্ত করে সমাধান করতে পারতো।’
সংবাদ সম্মেলনে ড. তোফায়েল আহম্মেদ, এম হাফিজউদ্দীন খান, ড. শাহদীন মালিক, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, দিলীপ কুমার সরকারসহ সুজনের অন্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘সিইসি হুদার বিরুদ্ধে আমাদের অভিযোগের আরেকটি কারণ হলো যে, তিনি এবং তার সহকর্মীরা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের ভোটাধিকার হরণ করেই ক্ষান্ত হননি, তারা আমাদের ভবিষ্যতের নির্বাচনী ফলাফলকে প্রভাবিত করার লক্ষ্যে একটি ‘ট্রোজান হর্স’ও রেখে যাচ্ছেন।’
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘এই ট্রোজান হর্সটি হলো- ইভিএম নামে পেপার ট্রেইল বিহীন একটি নিম্নমানের যন্ত্র, যা দিয়ে ডিজিটাল জালিয়াতি করা যায় এবং টেকনিক্যাল উপদেষ্টা কমিটির প্রধান হিসেবে প্রয়াত জামিলুর রেজা চৌধুরী যেটি কেনার সুপারিশে স্বাক্ষর করেননি।’
তিনি বলেন, ‘গত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারে ডিজিটাল জালিয়াতি করা হয়েছিল দুইবার ভোটের ফলাফল প্রকাশ করার মাধ্যমে। অন্যান্য দেশ, এমনকি তথ্য-প্রযুক্তিতে উন্নত দেশও যখন ইভিএম ব্যবহার থেকে সরে আসছে, তখন এ ভয়াবহ যন্ত্র ব্যবহারে সিইসি হুদার অতি উৎসাহ এবং রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য ছাড়া ইভিএম ব্যবহার না করার অঙ্গীকার থেকে সরে আসা লক্ষণীয় ও প্রণিধানযোগ্য।’
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘রাতের ভোট’ প্রসঙ্গে নূরুল হুদা বলেছেন, মধ্য রাতের ভোট তিনি দেখেননি, তবে এ ব্যাপারে অভিযোগ উঠেছে কিন্তু তদন্ত হয়নি। আর এ তদন্ত না করে তিনি তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন, যার মূল কারণ তার পক্ষপাতদুষ্টতা।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, একটি বিতর্কিত নির্বাচনের অকাট্য কিছু প্রমাণ ও তথ্য প্রকাশ করায় সুজন ও ড. বদিউল আলম মজুমদারের ওপর কে এম নুরুল হুদার ক্ষিপ্ত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।