নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১৭ জানুয়ারি, ২০২২ ৮:০৯ : অপরাহ্ণ
বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে আইন করাসহ চার দফা প্রস্তাব দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
আজ সোমবার বিকেল ৩টা ৫৫ মিনিটে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল বঙ্গভবনে পৌঁছায়।
৫টা ১০ মিনিটে বৈঠক শেষে বের হন তারা।
পরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করে আওয়ামী লীগ।
এ সময় দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ তথ্য জানান।
নির্বাচন কমিশন আইন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সংবিধানে নির্বাচন কমিশন গঠনে আইনের কথা রয়েছে। আওয়ামী লীগও ইসি আইন চায়। এরই মধ্যে ইসি আইনের খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এর পরের ধাপে পূর্ণাঙ্গ আইনটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পাবে। এরপর যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির আলোচনা-পর্যালোচনা শেষে আইনটি জাতীয় সংসদে পাসের জন্য উত্থাপন করা হবে। সংসদেই চূড়ান্ত হবে আইনটি।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ মানে চা চক্র, বঙ্গভবনে যাবো না: অলি
পরবর্তী নির্বাচন কমিশন গঠনের আগেই এই আইনটি পাস করা সম্ভব হবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আইন পাস করার বিষয়ে বিকল্প কোনো পদ্ধতি নেই। যেকোনো আইন পাসের জন্য প্রক্রিয়া একটিই। এই আইনের ক্ষেত্রেও একই প্রক্রিয়া প্রযোজ্য। এর বিন্দুমাত্র ব্যত্যয় ঘটার কোনো অবকাশ নেই।
দলের সভানেত্রী ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন-আওয়ামী উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান।
আরও পড়ুন: নির্বাচন কমিশন গঠন করে কী হবে, প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের
আওয়ামী লীগের চার দফা প্রস্তাবগুলো হলো-
(ক) সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৮-এর বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেবেন।
(খ) প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি যেরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করবেন, সেই প্রক্রিয়ায় তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেবেন।
(গ) প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের লক্ষ্যে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৮-এর বিধান সাপেক্ষে একটি উপযুক্ত আইন প্রণয়ন করা যেতে পারে। বর্তমানে এই ধরনের কোনো আইন না থাকায় সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের ক্ষেত্রে সংবিধান ব্যতিরেকে অন্য কোনো আইন প্রতিপালনের বাধ্যবাধকতা নেই। তবে সাংবিধানিক চেতনা সমুন্নত রাখতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের যোগ্যতা-অযোগ্যতা এবং তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া নির্ধারণের লক্ষ্যেই মূলত এ আইনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন গঠন বিষয়ে যে কোনো আইন হবে সাংবিধানিক বিধান মতে একটি বিশেষ ধরনের আইন। এ বিশেষ ধরনের আইন প্রণয়নের জন্য আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে কোনো সুনির্দিষ্ট উদাহরণ ছিল না। নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে একটি রাজনৈতিক মতৈক্য প্রতিষ্ঠা করতে একমাত্র বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি সাংবিধানিক রীতি ও রাজনৈতিক অনুশীলন প্রতিষ্ঠা করেছে।
(ঘ) সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচনের স্বার্থে সব নির্বাচনে অধিকতর তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন।