মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত ও গৃহবন্দী গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চিকে আরও চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির জান্তা সরকারের একটি আদালত।
অবৈধ ওয়াকিটকি রাখাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে এই কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে তাকে।
আজ সোমবার জান্তাশাসিত দেশটির একটি আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হ্যান্ডহেল্ড রেডিও ধারণ করে রপ্তানি-আমদানি আইন লঙ্ঘনের জন্য আদালত সু চিকে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং সিগন্যাল জ্যামারের সেট রাখার জন্য এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। তার এই দুটি শাস্তি একই সঙ্গে চলবে।
এর আগে সু চিকে করোনাভাইরাস বিধি সম্পর্কিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ভঙ্গের দায়ে আরেকটি অভিযোগে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
এর আগে কোভিড স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ ও উত্তেজনা উসকে দেওয়ার দায়ে তাকে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত।
গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক বাহিনী যখন অভ্যুত্থান ঘটিয়ে সু চির বাড়িতে তল্লাশি চালায়, তখন অবৈধ ওয়াকিটকি পাওয়ার অভিযোগ ওঠে।
তবে যারা সু চির বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেন, তারা বিনা ওয়ারেন্টেই তার বাড়িতে যান।
৭৬ বছর বয়সী সু চিকে উসকানি, কোভিড-১৯ স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ এবং রাষ্ট্রের গোপন তথ্য পাচারসহ প্রায় ডজনখানেক অভিযোগের মুখোমুখি করা হয়েছে।
এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন সু চি।
গত বছর ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী।
বন্দী করা হয় গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি ও তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) বিভিন্ন স্তরের কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে।
অভ্যুত্থানের পর ৭৬ বছর বয়সী গৃহবন্দী সু চির বিরুদ্ধে এক ডজন মামলা দায়ের করে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকার।
মামলাগুলোতে যেসব অভিযোগে করা হয়েছে তার মধ্যে, রাষ্ট্রের গোপন তথ্য পাচার, নিয়মবহির্ভূতভাবে ওয়াকি টকি রাখা ও ব্যবহার, ক্ষমতায় থাকাকালে ঘুষ গ্রহণ, নিজের দাতব্য সংস্থার নামে অবৈধভাবে ভূমি অধিগ্রহণ ও করোনা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ায় গাফিলতিসহ উত্তেজনা সৃষ্টি এবং কোভিড-১৯ প্রোটোকল লঙ্ঘনের মাধ্যমে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ভাঙার বিষয়টি রয়েছে।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের পর সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে এবং সুচির মুক্তির দাবিতে দেশজুড়ে আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। চলমান আন্দোলনে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন প্রায় ১ হাজার ৪০০ জন।