নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১৭ ডিসেম্বর, ২০২১ ১১:৫৭ : অপরাহ্ণ
বিজয় দিবসে ফুল দেওয়া আজকের ‘বিনা ভোটের’ সরকারের কাছে ‘অপরাধ’ উল্লেখ করে গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, ‘বেলা অনেক গড়িয়েছে, জল অনেক গড়িয়েছে। এবার ফাইনাল খেলার সময় হয়েছে।’
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মোমবাতি প্রজ্বালন’ কর্মসূচিতে তিনি হুঁশিয়ারি বলেন।
মহান বিজয় দিবসে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে গণ অধিকার পরিষদ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন নুরুল হক নুর।
এ সময় তিনি উত্তেজিত হয়ে স্লোগানে গর্জে উঠেন-‘ছাত্রলীগের কালো হাত ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও, যুবলীগের কালো হাত ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও।’
নুরুল হক বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের দিনে ফুল দিতে গেলে শরীয়তপুরে স্থানীয় সাংসদ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ-যুবলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগ আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেছে। এতে বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। টাঙ্গাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক চৌধুরীর নির্দেশে ছাত্রলীগ-যুবলীগ আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেছে। রাঙামাটির লংগদুতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবলু দাসের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে। জামালপুর, পাবনা এবং কুড়িগ্রামেও আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর ছাত্রলীগ-যুবলীগ বর্বর আক্রমণ করেছে।’
আরও পড়ুন: গান গাইলেন শেখ রেহানা, ভিডিও করলেন প্রধানমন্ত্রী
সরকারের প্রতি কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে ডাকসুর এই সাবেক ভিপি বলেন, ‘সরকারকে স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই, আমরা অনেক ধৈর্য ধরেছি, অনেক সহ্য করেছি; এভাবেই হামলা-মামলা চলতে থাকলে আত্মরক্ষার জন্য আমাদের যা কিছু আছে, তা নিয়েই ওদের প্রতিহত করবো।’
সরকারের উদ্দেশে করে নুরুল হক বলেন, ‘সাময়িকভাবে আহত ও রক্তাক্ত করেছো, একেবারে শেষ করতে পারবে না। পৃথিবীর কোথাও গণতন্ত্রকামী শক্তিকে ধ্বংস করা সম্ভব হয়নি। জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় ছাত্র-যুবক-তরুণ প্রজন্মকে আগামী দিনে লড়াই-সংগ্রাম করতে হবে। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য গণ অধিকার পরিষদের জন্ম হয়েছে।’
আরও পড়ুন: হিন্দুদের বাধার মুখে জুমার নামাজ পড়তে পারছেন না মুসলিমরা, ভারতে উত্তেজনা
বর্তমান সরকারকে ‘ফ্যাসিবাদী ও বিনা ভোটের স্বৈরাচার সরকার’ বলে আখ্যা দিয়ে ডাকসুর এই সাবেক ভিপি বলেন, এই সরকার পাকিস্তানি শাসকদের বর্বরতাকেও অতিক্রম করে গেছে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে তারা বিনা চিকিৎসায় হাসপাতালে পরিকল্পিতভাবে মেরে ফেলছে। এই সরকার ভিন্নমত ও বিরোধীদের একেবারেই সহ্য করতে পারছে না। যেখানেই ভিন্নমত দেখছে, সেখানেই হিংস্র জন্তু-জানোয়ারের মতো তারা হামলে পড়ছে।’
সরকারের কড়া সমালোচনা করে নুরুল হক বলেন, ‘পুলিশ প্রধান, র্যাব প্রধানসহ ঊর্ধ্বতন সাত কর্মকর্তার ওপর যে নিষেধাজ্ঞা এল, এই নিষেধাজ্ঞা কি তাদের পারিবারিক কারণে এসেছে? তাদের ব্যক্তিগত কারণে এসেছে? এসেছে এই বিনা ভোটের মাফিয়া সরকারের গদি টেকানোর জন্য মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে সে কারণে। তারা দেশকে কলঙ্কিত করেছে, যে কারণে পৃথিবী আমাদের আর গণতান্ত্রিক দেশ বলে মনে করছে না।’
বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে গণ অধিকার পরিষদের নেতা মুহাম্মদ রাশেদ খান ও ফারুক হাসান, যুব অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক আতাউল্লাহ, ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
নুরের বক্তব্যের ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন
আরও পড়ুন: পাকিস্তান যাচ্ছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী