শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা বিএনপি

‘খালেদা জিয়ার আবার রক্তক্ষরণ হলে মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যাবে, দেশে চিকিৎসা নেই’



নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২৮ নভেম্বর, ২০২১ ৮:০১ : অপরাহ্ণ

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিসের কারণে রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা।

একবার বন্ধ করা গেলেও আবার রক্তক্ষরণ হলে তা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না জানিয়ে খালেদা জিয়ার চিকিৎসকরা বলেছেন, রক্তক্ষরণ হয়ে মৃত্যুঝুঁকি আরও বেড়ে যাবে। এই রক্তক্ষরণ বন্ধের চিকিৎসা বাংলোদেশে নেই। যত দ্রুত সম্ভব তাকে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র বা জার্মানিতে নিয়ে যেতে হবে।

আজ রোববার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় ব্রিফিং করে এ তথ্য জানান তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা।

ব্রিফিংয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের রোগ নিয়ে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ডা. এফ এম সিদ্দিকী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিসের কারণে ব্লিডিং হচ্ছে। একবার এই রক্তক্ষরণ সামাল দেওয়া গেছে।’

সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পেট থেকে চাকা চাকা রক্ত যাচ্ছে উল্লেখ করে এই চিকিৎসক বলেন, ‘ইউনাইটেড হাসপাতালে একবার রক্ত দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়া গেছে। কিন্তু এই ধরনের রোগীকে বারবার রক্ত দেয়া সম্ভব নয়।’

‘খালেদা জিয়ার আবার রক্তক্ষরণ হলে মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যাবে, দেশে চিকিৎসা নেই’

ডা. এফ এম সিদ্দিকী বলেন, ‘পুনরায় রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা আগামী ছয় সপ্তাহে ৬০ ভাগ। আমরা আশঙ্কা করছি, আবার যদি ব্লিডিং হয় তাহলে যদি এটাকে কন্ট্রোল করা যাবে না। ব্লিডিং হয়ে মৃত্যুঝুঁকি আরও বেড়ে যাবে।’

এই চিকিৎসক বলেন, ‘খালেদা জিয়ার লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধে শুধু দেশের না, উপমহাদেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর চেয়ে বেশি কিছু আর আমাদের করার নাই।

ইন্টারভ্যানশনাল গ্যাস্ট্রো অ্যানালিস্ট চিকিৎসক আরেফিন সিদ্দিক লিভারে রক্তক্ষরণ ঠেকাতে চিকিৎসা পদ্ধতি তুলে ধরে বলেন, ‘এটা একটা হাইলি টেকনিক্যাল কাজ। এটাকে বলে টিপস। বাংলাদেশে টিপস করা কোনো রোগী আমরা দেখি না, যার দুই থেকে তিনবার এটা করা হয়েছে।’

তাহলে কোথায় এই চিকিৎসা করা যায়-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটার চিকিৎসা যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র বা জার্মানিতেই সম্ভব।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, প্রফেসর ডা. একিউ এম মহসিন, প্রফেসর ডা. নূর উদ্দিন, ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. আল মামুন।

গত ১৩ নভেম্বর বিকেলে খালেদা জিয়াকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি হওয়ায় পরের দিন ভোরে তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছে তার

চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে তার পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে।

তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, খালেদা জিয়ার করা আবেদনটি ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী আগেই নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ায় তাকে বিদেশ যেতে অনুমতি দেয়ার আইনি কোনো সুযোগ নেই।

আইনমন্ত্রীর মতে, আইন অনুযায়ী বিদেশ যেতে চাইলে খালেদাকে ফের জেলে গিয়ে আবেদন করতে হবে।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়। এরপর প্রথমে পুরান ঢাকার বিশেষ কারাগার ও পরে কারাবন্দি অবস্থায় বিএসএমইউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার নির্বাহী আদেশে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ ছয় মাসের জন্য তার সাজা স্থগিত করে মুক্তি দেয়। এরপর আরও তিন দফায় তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ায় সরকার।

আরও পড়ুন:

‘হায়াত-মউত আল্লাহর হাতে’, খালেদা জিয়ার অসুস্থতা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের

মাধ্যমিক স্কুলে অনলাইনে ভর্তির আবেদন করার নিয়ম

এসএসসি পাসে সৈনিক পদে নিয়োগ দিচ্ছে সেনাবাহিনী

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর