নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২৬ নভেম্বর, ২০২১ ৬:৪০ : অপরাহ্ণ
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় ‘স্লো পয়জনিং’ (ধীর গতির বিষ প্রয়োগ) করা হয়েছে কি না-তা নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রশ্ন তুলেছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপি মহাসচিবের এমন প্রশ্নের জবাবে একদিন পর পাল্টা প্রশ্ন তুললেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘খালেদা জিয়াকে আপনারা মাইনাস করার জন্য স্লো পয়জনিং করছেন কি না? সেই রকম কিছু করছেন বলেই কি উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে চান আওয়ামী লীগের ওপর?’
আজ শুক্রবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এমন সন্দেহ প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ফখরুল সাহেব বলেছেন, বেগম জিয়াকে নাকি স্লো পয়জনিং করা হয়েছে। তার (খালেদা জিয়া) পাশে থাকেন আপনারা। তাকে যে খাওয়ায় সে পরিবারেরই লোক। তার আশপাশে সর্বক্ষণ ঘোরাফেরা করে বিএনপির লোকেরা। আওয়ামী লীগ কিংবা সরকারের কেউ তার পাশে থাকে না। তার ব্যক্তিগত পছন্দের চিকিৎসকরাই চিকিৎসা দিচ্ছেন।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘স্লো পয়জনিং যদি করে থাকে, তাহলে পাশের লোকেরাই করতে পারে। হুকুমের আসামি শেখ হাসিনা হবেন না, হলে ফখরুল সাহেব আপনি হবেন।’
মির্জা ফখরুলের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনাদের পছন্দের লোকেরা চিকিৎসা করাচ্ছেন। এখানে আওয়ামী লীগকে জড়াচ্ছেন কেন? শেখ হাসিনা কেন হুকুমের আসামি হবেন?’
খালেদা জিয়ার কিছু হলে সরকারের কোনো দায় নেই উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কোনো কিছু হলে এর দায় বিএনপিকেই নিতে হবে, মির্জা ফখরুল সাহেবদের নিতে হবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, দেশের সংবিধান ও আইন দ্বারা দেশ পরিচালিত হচ্ছে। দেশের প্রচলিত আইন ও সাংবিধানিক নিয়মনীতির মধ্যে যতটুকু সম্ভব তার সবটুকু সুযোগ বেগম জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন। শেখ হাসিনার মানবিক হৃদয়ের কল্যাণে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি খালেদা জিয়া বাসায় থাকছেন। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নেয়ার সর্বোচ্চ সুযোগ পাচ্ছেন।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘হতে পারেন খালেদা জিয়া বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু আইনের চোখে তিনি একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, তার বর্তমান পরিচয় সাজাপ্রাপ্ত আসামি, এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।’
বিএনপি নেতারা প্রধানমন্ত্রীর উদারতাকে প্রতিহিংসা বলতে দ্বিধা করছেন না উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই দেশের রাজনীতিতে বিএনপি প্রতিহিংসার জন্ম দিয়েছে।’
খালেদা জিয়ার চিকিৎসাকে কেন্দ্র করে কোনো নৈরাজ্য হলে তা প্রতিহত করারও ঘোষণা দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, ‘আজকে মির্জা ফখরুল সাহেব বড় বড় কথা বলেন। দ্বার্থ্যহীন ভাষায় বলতে চাই। কারো চিকিৎসার নামে জনগণকে জিম্মি করা যাবে না। কোন ইস্যু সৃষ্টি করে শান্তিশৃঙ্খলা ভঙ্গ, নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করলে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ তা প্রতিহত করবে।‘
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক ও আফজাল হোসেন, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান ও উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
আরও পড়ুন:
কারাগারে খালেদা জিয়াকে ‘স্লো পয়জনিং’ করা হয়েছিল কি না, প্রশ্ন ফখরুলের
‘হায়াত-মউত আল্লাহর হাতে’, খালেদা জিয়ার অসুস্থতা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের