নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২০ নভেম্বর, ২০২১ ১২:২০ : অপরাহ্ণ
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতে গণঅনশন করছেন দলটির নেতা-কর্মীরা।
আজ শনিবার সকাল ৯টার দিকে ঢাকার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় এই কর্মসূচি শুরু হয়। চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
সারাদেশে মহানগর ও জেলা সদরেও বিএনপির সাত ঘণ্টার এই গণঅনশন কর্মসূচি চলছে।
সকাল ৮টার পর থেকেই বিএনপির নেতা-কর্মীরা অনশনে যোগ দিতে নয়াপল্টনে এসে জড়ো হতে থাকেন।
নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ফুটপাতে মাদুর বিছিয়ে নেতা-কর্মীরা বসেছেন।
কোরআন তিলওয়াতের পর খালেদা জিয়ার আশু আরোগ্য কামনায় বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়।
গণঅনশন কর্মসূচি উদ্বোধন করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ১৬ কোটি মানুষের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা অত্যন্ত গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে রয়েছেন। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে এখন। পরিবারের সদস্যরা বারবার আবেদন করলেও ফ্যাসিস্ট সরকার বেগম জিয়া’র বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে না।
তিনি বলেন, আজকের কর্মসূচি ১৬ কোটি মানুষের কর্মসূচি। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে গণঅনশন কর্মসূচি পালন করছি। শান্তিপূর্ণভাবে বিকাল চারটা পর্যন্ত চলবে।
গণঅনশনে রয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মঈন খান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানুল্লাহ আমানসহ শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের অনেকে। সাথে রয়েছেন বহু কর্মী।
বিএনপির গণঅনশণ কর্মসূচি ঘিরে সতর্ক রয়েছে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যেরা। পল্টন, ফকিরাপুল, নাইটিঙ্গেল মোড়, কাকরাইল মোড়সহ আশপাশের এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
গত ১৩ নভেম্বর বিকেলে খালেদা জিয়াকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি হওয়ায় পরের দিন ভোরে তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছে তার।
চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে তার পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, খালেদা জিয়ার করা আবেদনটি ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী আগেই নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ায় তাকে বিদেশ যেতে অনুমতি দেয়ার আইনি কোনো সুযোগ নেই।
আইনমন্ত্রীর মতে, আইন অনুযায়ী বিদেশ যেতে চাইলে খালেদাকে ফের জেলে গিয়ে আবেদন করতে হবে।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়। এরপর প্রথমে পুরান ঢাকার বিশেষ কারাগার ও পরে কারাবন্দি অবস্থায় বিএসএমইউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার নির্বাহী আদেশে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ ছয় মাসের জন্য তার সাজা স্থগিত করে মুক্তি দেয়। এরপর আরও তিন দফায় তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ায় সরকার।
আরও পড়ুন:
খালেদা জিয়াকে বাসায় থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি, আর কতো চান: প্রধানমন্ত্রী
খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর সুযোগ আইনের বইয়ে নেই, সংসদে আইনমন্ত্রী