প্রতিনিধি. গাজীপুর প্রকাশের সময় :২০ নভেম্বর, ২০২১ ৩:৩৫ : অপরাহ্ণ
আওয়ামী লীগ থেকে সদ্য বহিষ্কৃত গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, ‘আমি কোনো ভুল করিনি, দল থেকে বহিষ্কার করার মাধ্যমে আমার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে।’
গাজীপুর নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে বহিষ্কার করার পর আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে গরীর হারিকেন এলাকায় নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ কথা বলেন।
মেয়র জাহাঙ্গীর আলম তার আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ ফিরে পাওয়ার আকুতি জানিয়ে বলেন, ‘আমি এ সাধারণ সম্পাদক পদ চাই না, বাকি জীবন আওয়ামী লীগের সাধারণ সদস্য ও সমর্থক হয়ে থাকতে চাই।’
এ সময় তিনি কান্না করতে থাকেন। উপস্থিত দলীয় নেতা-কর্মীরাও কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে এখানে একটি হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
অশ্রুসিক্ত নয়নে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দেওয়া হয়েছে। দলের এই সিদ্ধান্ত আমার জন্য খুবই বেদনাদায়ক। আমাকে বহিষ্কার করে মানসিকভাবে আঘাত দেওয়া হয়েছে, যা আমি ও আমার পরিবার মেনে নিতে পারছি না।’
প্রধানমন্ত্রীর কাছে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে দাবি করে মেয়র বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দুই মাস ধরে দেখা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু দেখা করার অনুমতি দেয়া হয়নি। যদি দেখা করে কথাগুলো বলতে পারতাম তাহলে উনি সঠিক তথ্যটা জানতো। উনার কাছে সত্য তথ্য গেলে, অবশ্যই ন্যায়বিচার পেতাম।’
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘দলীয় প্রধান ও দল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটি আমি মাথা পেতে নিয়েছি।’
শুক্রবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত হয়।
গত ২২ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া চার মিনিটের ভিডিওতে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ ছাড়াও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এবং রাষ্ট্রীয় দুটি সংস্থা নিয়ে নানা আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন মেয়র জাহাঙ্গীর।
তিনি মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন এবং বঙ্গবন্ধুর দেশ স্বাধীন করার উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তুলেন।
তীব্র সমালোচনার মুখে পরে আরেক ভিডিও বার্তায় মেয়র দাবি করেছিলেন, ফেসবুকের ভিডিওটি সুপার এডিট করে প্রচার করে তাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করা হচ্ছে।
গত ৩ অক্টোবর দলের স্বার্থ পরিপন্থি কর্মকাণ্ড ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে জাহাঙ্গীর আলমকে শোকজ করে আওয়ামী লীগ।
দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সই করা শোকজ নোটিশে ১৫ দিনের মধ্যে জাহাঙ্গীরকে এর জবাব দিতে বলা হয়।
তবে নির্ধারিত সময়ের আগেই শোকজের জবাব দিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চান গাজীপুরের মেয়র।
আরও পড়ুন:
গাজীপুর সিটি মেয়র জাহাঙ্গীরকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার
লিটন, মায়া ও কামরুলকে প্রেসিডিয়াম সদস্য করলো আওয়ামী লীগ