সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা দেশজুড়ে

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার মিললো ৩ কোটি টাকা, ৪ কেজি সোনা-রূপা



প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ প্রকাশের সময় :৬ নভেম্বর, ২০২১ ৮:০১ : অপরাহ্ণ

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানসিন্দুক থেকে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমাণ ৩ কোটি ৭ লাখ ১৭ হাজার ৫৮৫ টাকা পাওয়া গেছে। এ বিপুল পরিমাণ টাকার পাশাপাশি বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রা ও প্রায় চার কেজির মতো সোনা-রূপাও মিলেছে।

আজ শনিবার সকাল ৯টার দিকে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে চার মাস পর মসজিদের আটটি দানবাক্স খোলা হয়। বাক্সগুলো থেকে টাকা বের করে প্রথমে বস্তায় ভরা হয়। এবার ১২ বস্তা টাকা হয়। এরপর শুরু হয় টাকা গণনার কাজ। টাকা গণনার কাজ শেষ হয় সন্ধ্যা ৭টায়।

বিদেশী মুদ্রার মধ্যে ছিল ভারতীয় রুপি সবচাইতে বেশি। আরো পাওয়া গেছে ডলার, ইউরো, সৌদি রিয়েল, ইয়েন ও দিনারসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা। বিদেশী মুদ্রার সঠিক পরিমাণ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে গণনা সংশ্লিষ্টরা ধারণা দেন, সোনা, রূপা ও বিদেশী মুদ্রা মিলে বাজার মূল্য অনুযায়ী এগুলোর দাম অর্ধ কোটি টাকার মতো হবে।

রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক ও কিশোরগঞ্জ করপোরেট শাখার প্রধান মো: রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ওই ব্যাংকের ৫০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী টাকা গণনায় অংশ নেন। তাদেরকে টাকা ভাঁজ করে সহযোগিতা করেন পাগলা মসজিদ অধীন মাদরাসার শতাধিক ছাত্র ও শিক্ষক।

এর আগে সর্বশেষ চলতি বছরের ১৯ জুন দানসিন্দুক খোলা হয়েছিল। তখন ২ কোটি ৩৩ লাখ ৯৩ হাজার ৭৮৯ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি দানবাক্স খুলে ২ কোটি ৩৮ লাখ ৫৫ হাজার ৫৪৫ টাকা পাওয়া গিয়েছিল।

কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের নরসুন্দা নদীর তীরে পাগলা মসজিদের অবস্থান। প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ মসজিদটির দানসিন্দুকগুলোতে নগদ টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার ছাড়াও গবাদিপশু, হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দান করেন।

কথিত আছে, এই মসজিদে দান করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়। সে জন্য দূরদূরান্ত থেকে ধর্মমত নির্বিশেষে অসংখ্য মানুষ এখানে দান করে থাকেন। এবার করোনার জন্য কিছুদিন মসজিদ বন্ধ থাকলেও দান–খয়রাত অব্যাহত থাকে।

দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত মসজিদটিকে পাগলা মসজিদ ইসলামী কমপ্লেক্স নামকরণ করা হয়েছে। এ মসজিদের আয় দিয়ে কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।

মসজিদ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীশ আলম বলেন, ১৯৯৭ সাল থেকে এই মসজিদটি ওয়াকফ’র আওতায় পরিচালিত হচ্ছে। তখন থেকে জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে মসজিদের সিন্দুক খুলে টাকা গণনা শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, এখানে একটি এতিমখানা রয়েছে। এতিমখানার খরচ এই টাকা থেকে চালানো হয়। এ ছাড়া মসজিদের বিভিন্ন উন্নয়নমূলককাজ এই অর্থে চলে। ক্যান্সার, কিডনি রোগে আক্রান্ত দরিদ্র ব্যক্তিদেরও এই তহবিল থেকে সাহায্য দেয়া হয়। মসজিদ ও ইসলামী কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দান বাক্সের টাকা ব্যাংক-হিসাবে জমা রাখা হয়। সেখান থেকে অনুদান ও সহায়তায় খরচ করা হয়।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর