বুধবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১ জমাদিউস সানি, ১৪৪৬

মূলপাতা খেলা

আরেকটি অসহায় হার, বিশ্বকাপ থেকে বিদায় বাংলাদেশের



নিজস্ব ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশের সময় : ২ নভেম্বর ২০২১, ৭:৩৮ অপরাহ্ণ

ম্যাচের ভাগ্য লেখা হয়ে গিয়েছিল ইনিংস বিরতিতেই। টস হেরে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ যে এক শ রানের পুঁজিও গড়তে পারেনি। ছোট্ট পুঁজি নিয়ে তবু লড়াইয়ে বার্তা ছিল বোলারদের। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা সেই ধাক্কা সামলে নিয়েছে খুব ভালোভাবেই। দিন শেষে তাই দাপুটে জয় প্রোটিয়াদের। এমন অসহায় আত্মসমর্পণ করে বিশ্বকাপ থেকে লাল-সবুজ বাহিনীর বিদায় নিশ্চিত হয়েছে। সেই সাথে বাংলাদেশ টি-২০ ফরম্যাটে ’খারাপ দল’ এই নির্মম সত্যও দাঁড়িয়ে গেছে।

আজ মঙ্গলবার আবুধাবিতে শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার পর্বের ম্যাচে বাংলাদেশকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৮৫ রানের লক্ষ্য তারা ছুঁয়েছে ১৩.২ ওভারে।

এই ছোট পুঁজি নিয়েও শুরুতে কিছুটা লড়াই করেছিল বাংলাদেশ। দারুণ বোলিংয়ে বাংলাদেশকে কিছুটা লড়াইয়ে রাখেন তাসকিন আহমেদ। কিন্তু ছোট পুঁজি নিয়ে এই লড়াইয়ে জেতা যথেষ্ট ছিল না।

আরেকটি অসহায় হার, বিশ্বকাপ থেকে বিদায় বাংলাদেশের

লক্ষ্য তাড়ায় ৩৩ রানে তিন উইকেট হারালেও রাসি ভন ডার ডাসেন ও তেম্বা বাভুমা সেই ধাক্কা সামলে দলকে নিয়ে যান জয়ের প্রান্তে। ডাসেন ২৭ বলে ২২ রান করে নাসুমের শিকার হয়ে ফেরেন। তবে ততক্ষণে জয় থেকে মাত্র ৫ রানে দূরে ছিল দল।

অধিনায়ক বাভুমা ২৮ বলে ৩১ রানে অপরাজিত থেকে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন। চার মেরে ম্যাচ শেষ করা ডেভিড মিলার অপরাজিত ছিলেন ৫ রানে।

এর আগে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু প্রোটিয়া বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি নাঈম-সৌম্যরা। লজ্জার ব্যাটিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মাত্র ৮৪ রানেই গুটিয়ে হয়ে যায় লাল-সবুজ বাহিনী।

বাংলাদেশি ব্যাটারদের দেখে মনেই হয়নি যে, তারা জিততে নেমেছে। যেন ম্যাচ খেলতে হবে এ জন্যই মাঠে নামা।

ইনিংসের শুরু থেকেই নড়বড়ে ছিল বাংলাদেশ। বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেনি ওপেনিং জুটি। প্রোটিয়া বোলার কাগিসো রাবাদার তোপে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ দলীয় ২৪ হারায় ৩উইকেট। পাঁচ বলের ব্যবধানে তিন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানকে প্যাভিলিয়নে পাঠান প্রোটিয়া পেসার।

তাড়াহুড়ো করে খেলতে গিয়ে ব্যক্তিগত ৯ রানে সাজঘরে ফিরেন নাইম। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের পঞ্চম বলে রাবাদাকে তুলে মারতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে সহজ ক্যাচ হন। পরের বলে আউট সৌম্য সরকারও। দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে সৌম্যকে বিদায় করেন রাবাদা। যদিও সৌম্যকে শুরুতে আউট দেননি আম্পায়ার। সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। রিভিউতে বোঝা যায় স্পষ্ট ছিল আউট।

এরপর উইকেটে আসেন মুশফিকুর রহিম। অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের দিকে তাকিয়ে ছিলেন সমর্থকরা। কিন্তু শূন্য রানে আউট হয়ে মুশফিক হতাশাই উপহার দিয়েছেন। এরপর ক্রিজে আসেন টাইগার দলপতি মাহমুদউল্লাহ। তিনিও বেশিক্ষন টিকতে পারেনি। ব্যক্তিগত ৩ রানে সাজঘরে ফিরেন।

মাহমুদউল্লাহর পর ক্রিজে নেমে প্রথম বলেই ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসের কাছে বোল্ড আফিফ হোসেন। ক্রিজ ছেড়ে এগিয়ে এসে বড় শট খেলতে যান, টাইমিং হয়নি। ভেঙে যায় স্টাম্প। এদিন তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে শূন্যের মুখ দেখলেন আফিফ। দলীয় ৩৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুকতে থাকে টাইগাররা।

আরেকটি অসহায় হার, বিশ্বকাপ থেকে বিদায় বাংলাদেশের

সতীর্থদের আশা যাওয়ার মিছিলে কিছুক্ষণ প্রতিরোধ গড়েন লিটন দাস। কিন্তু তিনি দুঃসময়ে বাংলাদেশকে পথে তুলতে পারলেন না। ৩৬ বলে ১ চারে ২৪ রান করে তাবরাইজ শামসির বলে আউট হন লিটন।

এরপর ক্রিজে আসেন যুব বিশ্বকাপ জয়ী অলরাউন্ডার শামীম হোসেন পাটোয়ারী। কিন্তু বিশ্বকাপে অভিষেক ম্যাচ স্মরণীয় করতে পারলেন না তিনি। টি-টোয়েন্টি সংস্করণে মারকুটে ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রশংসা কুড়ালেও এই ম্যাচ খেললেন ধীরগতির ইনিংস। শামীম ১১ রানে আউট হন।

এরপর মেহেদি একাই লড়াই করেন। তাকে সঙ্গ দিতে পারেনি কেউ। মেহেদি ২৫ বলে ২ চার ও ১ছক্কায় ২৭ রান করে আউট হন।

দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে বল হাতে ২০ রান খরচায় তিন উইকেট নেন রাবাদা। নরকিয়া ৮ রান দিয়ে পান সমান তিন উইকেট। আর ২১ রানে শামছি দুই উইকেট পান।

সুপার টুয়েলভ পর্বে টানা চার ম্যাচে হারার ফলে সেমিফাইনালের আর কোনো সম্ভাবনাই রইল না বাংলাদেশের। অন্যদিকে চার ম্যাচে তৃতীয় জয়ে প্রোটিয়ারা সেমিফাইনালের পথে থাকল খুব ভালোভাবেই।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর