নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২ নভেম্বর, ২০২১ ১:১৫ : অপরাহ্ণ
চট্টগ্রাম নগরীতে একটি বহুতল ছয় তলা ভবনে এক বছর পর আবার ‘রহস্যজনক’ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর উত্তর কাট্টলীর কমিউনিটি সেন্টার রোডে অবস্থিত মরিয়ম ভিলার ষষ্ঠ তলার একটি বাসায় এ ঘটনা ঘটে। আগুনে ওই পরিবারের ছয়জন সদস্য দগ্ধ হন।
পরিবারের সদস্যরা বলছেন, আগুন লাগার লাগে বাসায় একটা বিকট শব্দ হয়। এর আগে তারা বাসায় গ্যাসের গন্ধ পেয়েছেন।
পরিবারের সদস্যদের ধারণা, ‘গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে’ বিস্ফোরণের পর বাসায় আগুন লেগে যায়।
গত বছরের ৮ নভেম্বর ওই ভবনের ছয় তলায় বিস্ফোরণ থেকে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছিল। তখন ওই বাসায় আগুনে ৯ জন দগ্ধ হয়েছিলেন।
এক বছর পর ভবনটির ছয় তলায় একই বাসায় আবার একই ঘটনা ঘটলো। তবে জামাল শেখ ওই বাসায় নতুন ভাড়াটিয়া হিসেবে উঠেছেন।
আগুনে দগ্ধরা হলেন-জামাল শেখের স্ত্রী সাজেদা বেগম (৪৮), ছেলে শাহজাহান শেখ সানি (২৯), স্বাধীন শেখ (১৭) ও জীবন শেখ (১৪), মেয়ে মাহিয়া আক্তার (৯) এবং শাহজাহানের স্ত্রী দিলরুবা বেগম (১৮)।
তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। দগ্ধদের মধ্যে সাজেদা বেগমের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, জামাল শেখ স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা কর্মী। তার গ্রামের বাড়ি জামালপুরে।
চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের পশ্চিম জোনের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজনীতি সংবাদকে বলেন, সাদা চোখে ভবনটিতে গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ হয়েছে-এ মুহূর্তে তা বলাটা ঠিক হবে না। আমরা বিশেষজ্ঞের মতামতের অপেক্ষা করছি। এরপর আমরা বিস্ফোরণের রহস্য জানতে পারবো।
জানা গেছে, রাতে বিস্ফোরণের সময় জামাল শেখ বাসায় ছিলেন না। বাসায় পরিবারের সাতজন সদস্য ছিলেন। এদের মধ্যে জামাল শেখের অপর একজন ছেলে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের সময় কোনো আঘাত পাননি।
আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা এনামুল হক রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের আগে তারা গ্যাসের দুর্গন্ধ পেয়েছেন। পরিবারের এক সদস্য ঘুমানোর আগে মশা মারার জন্য ইলেকট্রিক ব্যাট হাতে নেন। একটি মশা মারার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যাট স্পার্ক করে প্রথমে বিস্ফোরণ হয় ও পরে বাসায় আগুন লেগে যায়।’
ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ওই বাসায় কোনো সিলিন্ডার ছিল না, গ্যাসের লাইন ছিল। কিন্তু অগ্নিকান্ডের পর রান্নাঘরে গ্যাসের চুলা অক্ষত রয়েছে। তবে রান্না ঘরের দরজা বাঁকা হয়ে গেছে। রান্নাঘরের পাশের একটি কক্ষে আগুনে বিছানা, আলনা পুড়ে গেছে। পরিবারের সদস্যরা বাসায় আগুন লাগার আগে একটা বিকট শব্দ শুনেছেন। বিষয়টা কিছুটা রহস্যজনক। ফলে গ্যাসের লাইনের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ ও আগুন লেগেছে কিনা সেটা আমরা এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।’