বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

ফেসবুক এখন ‘মেটা’র অন্তর্ভুক্ত



রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৯ অক্টোবর, ২০২১ ৯:২০ : পূর্বাহ্ণ

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সাইট হিসেবে ফেসবুকের নাম বদলায়নি, বরং এটি এখন নতুন একটি সোশ্যাল টেকনোলজি কোম্পানির অংশে পরিণত হয়েছে। নতুন এই কোম্পানির নাম ‘মেটা’।

বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় নিজের অফিসিয়াল পেজ থেকে ‘ফাউন্ডার্স লেটার ২০২১’ শিরোনামে এক অনুষ্ঠানে কোম্পানির এই নতুন নাম ঘোষণা করেছেন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ।

ফেসবুকের সিইও মার্ক জাকারবার্গ জানান, বর্তমান সামাজিক যোগাযোগ সাইট ফেসবুকের নাম অপরিবর্তিত থাকছে। ‘মেটা’ হবে ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগ সাইটের মূল কোম্পানি, যাকে কেন্দ্র করে আরও বেশ কিছু নতুন প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠবে। সব মিলিয়ে একে বলা হচ্ছে ‘মেটাভার্স’।

শুধু নাম নয়, ফেসবুক কোম্পানি বদলে ফেলেছে তাদের লোগো। স্টক টিকারে এফবি (FB) হয়ে গেছে এমভিআরএস ( MVRS ) যা কার্যকর হবে ডিসেম্বরের ১ তারিখ থেকে।

২০০৪ সালে মার্ক জাকারবার্গ ‘ফেসবুক ইনকরপোরেশন’ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠানটি ২০১২ সালে ছবি ও ভিডিও শেয়ার করার সাইট ইনস্টাগ্রাম কিনে নেয়। ২০১৪ সালে কিনে নেয় হোয়াটসঅ্যাপ। সবগুলোই ‘ফেসবুক ইনকরপোরেশন’ এর অংশ হিসেবে পরিচালিত হয়ে আসছিল, যা এখন থেকে ‘মেটা ইনকরপোরেশন’ হিসেবে কাজ করবে। শুধুমাত্র সামাজিক যোগাযোগ এবং কর্পোরেট পরিচয় থেকে বের হয়ে আসার লক্ষ্যে নিজেদের নাম পরিবর্তন করেছে ফেসবুক ইনকরপোরেশন।

প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টার ৪টি সেশনে ‘মেটাভার্স’ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন মার্ক জাকারবার্গ।

তিনি জানান, ফেসবুকের সাথে যুক্ত হচ্ছে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্লাটফর্ম। ফলে একটি চশমা পরেই পৃথিবীর এক প্রান্তের রোগি অন্য প্রান্তের চিকিৎসকের সেবা নিতে পারবেন, কৃত্রিম স্পর্শ করে জানাতে পারবেন সহানুভূতি।

জুম বা বিভিন্ন অনলাইন মিটিং প্লাটফর্ম ব্যবহার করে যারা ভার্চুয়াল মিটিং করছিলেন, তারা বিনামূল্যে এই সামাজিক মাধ্যমেই সেটা করতে পারবেন সীমাহীন সময় ধরে। যুক্ত হবে ‘পিক্সার-লাইক এনিমেটর’ নামের নতুন গেমিং প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তিতে যেকোন গেম নতুন রিয়েলিটি পাবে। যিনি গেমটি খেলবেন, তিনি সরাসরি গেমের রিয়েলিটিতে প্রবেশ করে নিজেই গেমের চরিত্র হয়ে উঠবেন। প্রাথমিকভাবে এই প্রযুক্তিতে চুক্তি করেছে জনপ্রিয় গেম ‘গ্রান্ড থেফট অটো’।

এছাড়া পিএইচডি, গবেষণা, চিকিৎসা, ভাষা শেখাসহ শতাধিক সম্ভবনা থাকছে ফেসবুক তথা মেটার অগমেনটেড রিয়েলিটিতে। মূলত বিশ্বের সব প্রান্তকে ১৮০ ডিগ্রী দৃষ্টি সীমানায় নিয়ে আসার চেষ্টা থেকেই নতুন নাম দেয়া হয়েছে-মেটা। মার্ক জানান, সব সেবাকে একটি করে মাইল ফলক বা ভার্স হিসেবে চিন্তা করলে, গোটা কোম্পানি এই গ্রহের মধ্যেই তৈরি করবে মেটাভার্স।

মার্ক জাকারবার্গ

জাকারবার্গ কোম্পানির ভবিষ্যতকে কোথায় দেখছেন? নিজের পেইজের লাইভ ইভেন্টে এমন প্রশ্নে মার্ক জানান, এখন এটা আমরা সামাজিক যোগাযোগ কোম্পানি হিসেবেই দেখছি। কিন্ত আমাদের ডিএনএ-তে যেটা আছে সেটা তারচেয়ে অনেক বড় কিছু। সামনের দিনগুলোতে বিশ্বে একমাত্র ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি বা নেতৃত্ব দেবার মতন প্রযুক্তি হচ্ছে মেটাভার্স। সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীদের সাথে মেটাভার্স প্রযুক্তির পরিচয়টি হবে ধাপে ধাপে, একটু একটু করে।

জাকারবার্গ জানান, এখনই মেটাভার্সের পুরো সুফল মিলবেনা। অপেক্ষা করতে হবে ৫ থেকে ১০ বছর। এই সময়ের মধ্যে মেটার্ভাস প্রকল্পে নতুন প্রযুক্তি আর উদ্ভাবনের প্রয়োজন পড়বে, আর এজন্য আগামী বছরেই ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হবে মেটাভার্সে। এই বিনিয়োগ চলমান থাকবে।

নাম পরিবর্তনের দিনে নতুন দুটো প্রযুক্তির উদ্বোধন করেছে ফেসবুক। প্রথমে একটি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হেডসেটের উদ্বোধন করেন মার্ক জাকারবার্গ। প্রজেক্ট ক্যামব্রিয়া নামের এই হেডসেটটিতে ফেসবুকের যেকোনো গেম খেলা যাবে, স্মার্টফোনের পাশাপাশি যুক্ত করা যাবে প্লে-স্টেশন এবং এক্সবক্স।

এরপর অগমেন্টেড রিয়েলিটি সুবিধা যুক্ত একটি স্মার্ট গ্লাসের উদ্বোধন করেন জাকারবার্গ। স্মার্ট গ্লাসটির নাম ‘নাসারে’। এর মাধ্যমে ভার্চুয়াল চিকিৎসা সেবা নিতে পারবে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীরা।

এদিকে কোম্পানির নাম পরিবর্তনের ঘোষণার কয়েকঘন্টার মধ্যেই পুঁজিবাজারে মেটার শেয়ার মূল্য ৩ শতাংশ বেড়ে যায়।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর