নিজস্ব ক্রীড়া প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২৭ অক্টোবর, ২০২১ ৭:১৫ : অপরাহ্ণ
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট কাকে বলে সেটাই যেন বাংলাদেশকে ধরে ধরে শেখালো ইংল্যান্ড। একই সঙ্গে এটাও বুঝিয়ে দিলো ছোটদল আর বড় দলের মধ্যে পার্থক্য।
আজ বুধবার আবুদাবির শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভে টাইগারদের ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে ইংলিশরা।
এর মধ্য দিয়ে টানা দুই জয়ে বি গ্রুপের শীর্ষে উঠে এলো দলটি। অপরদিকে, দুটো ম্যাচ হেরে সেমিফাইনালে যাওয়ার আশা অনেকটাই কমে এলো বাংলাদেশের।
১২৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৪.১ ওভারেই ২ উইকেট হারিয়ে সহজেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড।
রান তাড়ায় শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করেন জস বাটলার ও জেসন রয়।
২৯ বলে ৩৯ রানের এই জুটি ভেঙে ব্রেক থ্রু আনলেন নাসুম আহমেদ। ১৮ বলে ১ চার ও ১ ছয়ে ১৮ রান করে লং অফে মোহাম্মদ নাঈমকে ক্যাচ দেন বাটলার।
এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ইংলিশদের দারুণ জুটি উপহার দেন জেসন রয় ও ডেভিড মালান। দুজনে মিলেন গড়েন ৭৩ রানের জুটি। এই জুটিতে চড়েই সহজ লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড।
জেসন ৩৮ বলে ৫ চার ও ৩ ছয়ে ৬১ রান করে নাসুম আহমেদকে ক্যাচ দেন। এরপর ডেভিড মালার ২৮ ও জনি ৮ রানে অপরাজিত ছিলেন।
এ জুটি ভাঙেন বিশ্বকাপের অভিষেক হওয়া বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম।
শেষ দিকে নেমে জনি বেয়ারস্টো করেন ৮ রান।
বাংলাদেশি বোলাররা কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারেননি। পুরো সাবলিলভাবে ব্যাটিং করেছেন ইংলিশ ব্যাটাররা।
এর আগে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১২৪ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২৯ রান করেন মুশফিকুর রহিম।
ব্যাটিংয়ের শুরুতেই হতাশ করেন দুই ওপেনার লিটন দাস ও মোহাম্মদ নাঈম। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে সাজঘরে ফেরেন লিটন ও নাঈম। মঈন আলীর বলে সুইপ খেলার চেষ্টা করেন লিটন। টাইমিং ঠিক হয়নি। ব্যাটের কানায় লেগে বল চলে যায় স্কয়ার লেগে। সেখানে থাকা লিভিংস্টোন ক্যাচ নিতে ভুল করলেন না। ৮ বলে ৯ রানে বিদায় নেন ডানহাতি ওপেনার।
পরের বলেই মঈন আলীর ফাঁদে পা দেন নাঈম। ইংলিশ অফ স্পিনারের বলে ক্রিজ থেকে বেরিয়ে উড়িয়ে মারেন নাঈম। বল চলে যায় মিডঅনে। ক্যাচ নিয়ে ফিরিয়ে দেন ত্রিস ওকস। ৭ বলে ৫ রানে করেন নাঈম।
দায়িত্ব নিতে পারেননি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরাও।
ওয়ানডাউনে নেমে দায়িত্ব নিতে পারলেন না সাকিব আল হাসানও। ষষ্ঠ ওভারে তাঁকে শিকার বানান ওকস। ইংলিশ তারকার লেগ স্টাম্পে থাকা লেংথ বল ফাইন লেগের ওপর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু জোর দিয়ে মারতে পারেননি। দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে সাকিবকে (৪) ফিরিয়ে দেন আদিল রশিদ।
এরপর মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্ট করে বাংলাদেশ। ওই জুটিও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি।
মুশফিক রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে লিয়াম লিভিংস্টোনের বল তার প্যাডে লাগে। আম্পায়ার তার আপিলে সাড়া দেননি। রিভিউ নেয় ইংল্যান্ড। তারাই জিতেছে। এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফিরেন মুশফিক। তিনি ৩০ বলে ৩ চারে ২৯ রান করেন।
এরপর শুধু হতাশাই দেখেছে বাংলাদেশ। দায়িত্ব নিতে পারলেন না আফিফ হোসেন। রান আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এরপর বিদায় নেন মাহমুদউল্লাহও। ধুঁকে ধুঁকে অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ ২৪ বলে এক চারে ১৯ রান করে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান।
শেষ দিকে নাসুম চেষ্টা করলেও দ্রুত অভিজ্ঞ ব্যাটারদের হারিয়ে বেশিদূর যেতে পারল না বাংলাদেশ। নাসুম ৯ বলে ১৯ রান করে রান একটু বাড়িয়ে নেন। তবে ভালো উইকেটে বড় রানের যে লক্ষ্যের কথা অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ বলেন তা পূরণ হয়নি।
ইংল্যান্ডের হয়ে স্পিনার মঈন আলী, লিয়াম লিভিংস্টোন ও পেসার টাইমল মিলস দুটি করে উইকেট নেন।