নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২২ অক্টোবর, ২০২১ ৯:২১ : অপরাহ্ণ
কুমিল্লার পূজামণ্ডপের ঘটনায় আটক হওয়া যুবক ইকবাল হোসেন এতোদিন কোথায় ছিলো, কারা তাকে সেখানে (কক্সবাজার) নিলো তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘এই বিশ্বাসটা কে করবে?’
আজ শুক্রবার বিকেলে এক আলোচনা সভায় শারদীয় দুর্গাপূজায় বিভিন্ন স্থানে পূজা মণ্ডপে হামলার কয়েকটি ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি এই প্রশ্ন তুলেন।
সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের মিলনায়তনে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশ লেবার পার্টি ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
উল্লেখ্য, কুমিল্লার নানুয়ার দিঘির পাড়ের অস্থায়ী পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন মাজীদ রাখার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ইকবাল হোসেনকে বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১০টার দিকে কক্সবাজার সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে আটক করে পুলিশ।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা তো পরিষ্কার, এটা সত্য ঘটনা, সবাই এটা মানে যে, সরকারের মদদ ছাড়া কখনো সাম্প্রদায়িক সমস্যা তৈরি হয় না। যারা সরকারে থাকে তারাই করে। আজকে যে পত্র-পত্রিকায় লেখা হচ্ছে, এই যে ইকবালের কথা কিছুক্ষণ আগে একজন বললেন। ইকবাল নামে একজন বলা যেতে পারে, একটা অপ্রকৃতিস্থ এবং মাদকসেবী তাকে ধরা হয়েছে।’
সারা দেশে পূজামণ্ডপে সংঘটিত হামলা ঘটনার প্রসঙ্গে সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলে গেলো, কেন আপনারা (সরকার) সেখানে কোনো পুলিশ পাঠালেন না বা পুলিশ গেলো না বা পুলিশ থেকেও কোনো ব্যবস্থা নিলো না? কেনো এটা হলো? রংপুরের ঘটনায় দেখলাম, একদিকে ওসি, চেয়ারম্যান সবাই মিলে আলোচনা করছে একটা আপোষ করার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে বাইরে থেকে এসে লোকজন মাঝিপাড়া জ্বালিয়ে দিয়েছে। দুর্ভাগ্য। তাহলে কি আমরা বলবো যে, তাদের ছত্রছায়ায় এই ঘটনা ঘটেছে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আক্রমণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কুমিল্লার ঘটনার পর ওবায়দুল কাদের সাহেব কী করলেন? তিনি বললেন, এটা বিএনপি-জামায়াতের লোকেরা করেছে। কথায় কথায় উনি একটাই কথা বলেবেন যে, যত দোষ নন্দ ঘোষ। আপনাদের চরম ব্যর্থতা যে, আজকে এই সমাজে কোনো মানুষের নিরাপত্তা দিতে পারেন না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের তারা ধর্ম বিশ্বাস করেন, তারা তাদের ধর্ম পালন করবেন, মুসিলম ধর্মের মানুষেরা তাদের ধর্ম পালন করবেন, বৌদ্ধরা তাদের ধর্ম পালন করবেন, খৃষ্টানরা তাদের ধর্ম পালন করবেন- এটাই তো বাংলাদেশ। আপনারা (সরকার) কী করছেন? অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশে একটা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করছেন; যা হাজার বছর ধরে চলে আসছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে শুধু মানুষের দৃষ্টিটা, মানুষের মনোযোগকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য সরকার এই বিষয়টাকে সামনে নিয়ে এসেছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের সমস্যা এখন জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। আমাদের সমস্যা হচ্ছে যে, আমরা ভোট দিতে পারি না। আমাদের সমস্যা হচ্ছে যে, আমরা কথা বলতে বলতে পারি না। আমাদের অধিকারগুলো নেই, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ধবংস হয়ে গেছে। সেই জায়গাগুলো থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিয়ে এসে একটা সাম্প্রদায়িক সংকট, সাম্প্রদায়িক সমস্যা তৈরি করছে।’