নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২২ অক্টোবর, ২০২১ ২:৩০ : অপরাহ্ণ
কুমিল্লা নানুয়া দীঘিপাড়ের দুর্গাপূজার মণ্ডপে ঘটনার দিন দিবাগত রাত তিনটা থেকে চারটার দিকে কী কারণে কিছু সময়ের জন্য বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল সে বিষয়টি তদন্তের আওতায় আনা হলো কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।
আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জী এ প্রশ্ন তুলেন।
‘শারদীয় দুর্গাপূজার সময় সারা দেশের পূজামণ্ডপে সাম্প্রদায়িক শক্তির হামলা, লুটপাট, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও হত্যার’ বিষয়ে এ্ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নির্মল কুমার চ্যাটার্জী প্রশ্ন রাখেন, থানার ওসি হনুমান মূর্তির কোলের ওপর রাখা পবিত্র কোরআন মাজীদ সরিয়ে নেওয়ার পর কেন ভিডিও করার সুযোগ দিলেন এবং কেন সে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, তা সবার কাছে বিরাট প্রশ্ন হিসেবে দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দুর্গাপূজার আগে ৪ অক্টোবর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ৬ অক্টোবর ডিএমপি কমিশনার, পুলিশের মহাপরিদর্শকের সঙ্গে আমাদের মতবিনিময় হয়। প্রতিটি সভায় বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা প্রতিনিধি, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রতিটি সভায় প্রত্যেকে স্ব-স্ব অবস্থান থেকে নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন।
বক্তব্যে বলা হয়, ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের রামু থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিগত কয়েক বছর ধরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বা হচ্ছে। কোনো কোনো হামলার ক্ষেত্রে সর্বদলীয় অংশগ্রহণের ঘটনা ঘটেছে।
নির্মল কুমার চ্যাটার্জী বলেন, দেশে আইন আছে। প্রকৃতই কোনো ব্যক্তি, সে যে ধর্মেরই হোক না কেন, এ ধরনের ন্যক্কারজনক অপরাধ করলে তাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে না দিয়ে একজনের কথিত অপরাধে একটি সম্প্রদায়ের ওপর হামলা প্রকারান্তরে এ দেশের হিন্দু সম্প্রদায়কে দেশান্তরি করার নীলনকশার অংশ বলে সাধারণ হিন্দুরা মনে করে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, রাজনৈতিক দলের পারস্পরিক দোষারোপের কারণে প্রকৃত দোষীরা পার পেয়ে যাচ্ছে, যা দেশের আইনশৃঙ্খলা ও পারস্পরিক আস্থার জন্য সুখকর নয়।
সাম্প্রতিক হামলায় সম্পদের যে ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণে এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের পূর্ণ নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ সুরক্ষার জন্য কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে। এর মধ্যে রয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত সব মন্দির ও বাড়িঘর সরকারি খরচে নির্মাণ, নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ব্যবস্থা করে দিতে দাবি করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পরিষদের সাবেক সভাপতি কাজল দেবনাথ, উপদেষ্টা জয়ন্ত সেন, মহানগর কমিটির সভাপতি শৈলেন মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক কিশোর মণ্ডল প্রমুখ।
আরও পড়ুন: কুমিল্লার ঘটনায় অভিযুক্ত ইকবাল হোসেন কক্সবাজারে আটক