বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪ | ১৯ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২২ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা আইন-আদালত

সিনহা হত্যা মামলা: গৃহবধূ ও সেনাবাহিনীর পাঁচ সদস্যের সাক্ষ্য গ্রহণ

‘কিশোরীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে থানায় ৪-৫ দিন আটকে রাখেন ওসি প্রদীপ’


প্রতিনিধি, কক্সবাজার প্রকাশের সময় :১০ অক্টোবর, ২০২১ ১১:০১ : অপরাহ্ণ
Rajnitisangbad Facebook Page

কক্সবাজারে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় আরও ছয়জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

আজ রোববার পঞ্চম দফায় কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে টেকনাফ উপজেলার বাসিন্দা এক গৃহবধূ ও সেনাবাহিনীর পাঁচ সদস্যের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলী পিপি ফরিদুল আলমসহ তিনজন আইনজীবী।

সকাল ১০টায় বেবী বেগমকে দিয়ে শুরু হয় আদালতের বিচারকাজ। বেবী বেগমের বাড়ি টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের লম্বাবিল গ্রামে।

সাক্ষ্যে বেবী বেগম আদালতকে বলেন, ওসি প্রদীপের নেতৃত্বে কয়েকজন লোক তার বাড়ি থেকে বিয়ের উপযুক্ত মেয়েকে তুলে নিয়ে টেকনাফ থানার দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে চার-পাঁচ দিন আটকে রাখেন এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে খারাপ কাজ করেন। যে কারণে মেয়েটি বাড়িতে ফিরে বারবার আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।

প্রশাসন ওসি প্রদীপের পক্ষে থাকায় মামলা করার সাহস পাননি দাবি করে বেবি বেগম বলেন, মেজর সিনহা হত্যা মামলার পর তিনি সাহস পেয়ে ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে আদালতে ধর্ষণ মামলা করেছেন।

বেবি বেগম ছাড়াও সেনা কর্মকর্তা লে. আরেফিন, করপোরাল নুর আহমদ, সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার সৈয়দ মঈন ও রুহুল আমিন এবং লেন্স করপোরাল আবু জাফর আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন।

সেনা সদস্যরা সবাই মেজর সিনহা হত্যার রাতে সেনা সদস্যদের সঙ্গে ওসি প্রদীপের দুর্ব্যবহার ও মেজর সিনহা হত্যাকে পরিকল্পিতভাবে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টার বিষয়টি আদালতে তুলে ধরেন।

সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে সাক্ষীদের জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

মেজর সিনহা হত্যা মামলা বিচারকাজে যুক্ত একাধিক আইনজীবী এসব তথ্য জানিয়েছেন।

এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ মামলার ১৫ আসামিকে প্রিজনভ্যানে করে কড়া পুলিশ পাহারায় আদালতে আনা হয়।

কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি ফরিদুল আলম বলেন, মামলায় সাক্ষ্যদানের জন্য ৮৩ জন সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত ৫৯ জনকে আদালত নোটিশ দিয়েছেন। গত ২৩ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ২৫ জনের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।

তিনি জানান, রোববার পঞ্চম দফায় প্রথম দিনে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৯ জন সাক্ষী আদালতে উপস্থিত থাকলেও ৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করতে পেরেছেন আদালত।

গত বছরের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে মেজর সিনহা নিহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি (টেকনাফে দুটি, রামুতে একটি) মামলা করে। ঘটনার পর গত ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে প্রদীপ কুমার দাশ, লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন মেজর সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস।

২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও র‍্যাব-১৫ কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম।

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর