শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা আইন-আদালত

‘আমি দেশ, সরকার ও বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে কথা বলিনি’, বিচারককে মুফতি ইব্রাহীম



নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ৬:৪৫ : অপরাহ্ণ

দেশের আলোচিত-সমালোচিত ইসলামী বক্তা মুফতি কাজী মুহাম্মদ ইব্রাহীমকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় দুই দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।

আজ বুধবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমান এই আদেশ দেন।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে মুফতি কাজী ইব্রাহীমের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করা হয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য এবং ফেসবুক লাইভে এসে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্তি করার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সিকিউরিটি বিভাগ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছে।

এ ছাড়া মোহাম্মদপুরের জেড এম রানা নামের এক ব্যক্তি ৩৮৫, ৪০৬, ৪২০ এবং ৫০৬ পেনাল কোডের ধারায় ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন।

মোহাম্মদপুর থানার মামলায় মুফতি ইব্রাহীমকে আজ ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই হাসানুজ্জামান। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন।

রিমান্ড শুনানির সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘মুফতি কাজী মুহাম্মদ ইব্রাহীম একজন স্বনামধন্য আলেম। তিনি হাদিসের বিশারদ। তিনি দেশ ও সরকারের নামে কোনো উসকানিমূলক কথা বলেননি। তার কথায় সরকারের পতন হয়ে যাবে, সরকার এতটা দুর্বল নয়। তাকে রিমান্ডে নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই।’

আইনজীবী আরও বলেন, ‘গত ২৭ সেপ্টেম্বর মুফতি ইব্রাহীমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই সময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রিমান্ডের ফরওয়ার্ডিং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সব লিখে দেওয়া হয়েছে। রিমান্ডে নিয়ে আর কোনো তথ্য উদঘাটন করা হবে না। রিমান্ডে নিলে শুধু নির্যাতনই করা হয়। এছাড়া আর কিছুই না। দয়া করে রিমান্ড নামঞ্জুর করা হোক।’

তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন শুনানিতে বলেন, ‘মুফতি কাজী ইব্রাহীম দেশ ও সরকারের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক কথাবার্তা বলেছেন। যা দেশের ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। তিনি দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি করেছিলেন। তার সর্বোচ্চ রিমান্ড দেওয়া হোক।’

এরপরে মুফতি কাজী ইব্রাহীম বিচারকের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি দেশ, সরকার ও বঙ্গবন্ধুর পক্ষে কথা বলেছি। আমি তাদের বিরুদ্ধে কথা বলিনি। এই সোনার বাংলাদেশ ৩০ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি। এ দেশের ক্ষতি আমরা চাই না।’

শুনানি শেষে বিচারক দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

গত সোমবার দিবাগত রাতে মুফতি কাজী ইব্রাহীমকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জাকির হোসেন রোডের একটি বাসা থেকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য এবং নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন ডিবির যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম।

ইসলামী বক্তা মুফতি কাজী ইব্রাহীম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বহুল আলোচিত-সমালোচিত। করোনা মহামারি নিয়ে নানা বক্তব্য দিয়ে তিনি ভাইরাল হন।

বিভিন্ন সভায় তিনি দাবি করতে থাকেন যে, ইতালিপ্রবাসী মামুন মারুফ নামের কথিত এক ব্যক্তির স্বপ্নযোগে ভাইরাসের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কথা বলেন। বিজ্ঞান সম্পর্কেও তিনি ভিত্তিহীন কথা বলে ট্রলের শিকার হন। নারীদের নিয়ে তার বিদ্রুপ মন্তব্যেরও সমালোচনা করেন অনেকে। সম্প্রতি ইংরেজ কবি ও নাট্যকার উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের নাম শেখ যুবায়ের ছিল বলেও মন্তব্য করেন মুফতি ইব্রাহীম।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর