নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ৪:০১ : অপরাহ্ণ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্ন রেখে বলেছেন, ‘খালেদ মোশাররফ যখন আহত হন তখন জিয়া সেক্টর কমান্ডার হয়। কিন্তু তার সেক্টরে সব চেয়ে বেশি মুক্তিযোদ্ধা মারা যান। তা হলে জিয়া কাদের জন্য যুদ্ধ করেছেন? আমাদের মানুষকে মারা জন্য?’
আজ বৃহস্পতিবার একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
যুদ্ধে জিয়ার অবদান কীতিা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পাকিস্তানী কর্নেল আসলাম বেগ ঢাকা থেকে সে সময় জিয়াউর রহমানকে একটা চিঠি দিয়েছিলেন। চিঠিতে লিখেছিলেন, ‘আপনি অনেক ভালো কাজ করছেন। আপনার স্ত্রী পুত্ররা অনেক ভালো আছে, কিছু চিন্তা করবেন না। ভবিষ্যতে আপনাকে আরো ভালো কাজ দেয়া হবে।’’
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যু সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়া নিহত হলে তার লাশ পাওয়া যায়নি। তার লাশ সনাক্ত করেন মীর শওকত। তাকে আমি জিজ্ঞাস করেছিলাম, ‘সত্যি কথা বলেন তো, লাশ কি পেয়েছিলেন?’ তিনি আমাকে বলেছিলেন, ‘লাশ কোথায় পাবো।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি এরশাদ সাহেবকেও জিজ্ঞাস করেছিলাম, কার বাক্স আনলেন, তখন এরশাদ সাহেব বলেছিলেন, বোন, লাশ কোথায় খুঁজে পাবো। এটাই তো প্রকৃত সত্য।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়া যে বঙ্গবন্ধুর হত্যার সঙ্গে জড়িত তা তো প্রমাণিত হয়েছে। বিদেশি বহু লেখকের বইতে তা লেখাও রয়েছে। তা না হলে সে কি করে যারা সরাসরি বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের পুরষ্কৃত করলো? ইনডেমনিটি আদেশ দিয়ে বিচার না করে বিদেশি দূতাবাসে রাষ্ট্রদূত করে পাঠালো। অনেককে সংসদে এনে পতাকা তুলে দিয়েছিল।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তার আমলে প্রতি রাতে শত শত মানুষকে হত্যা করেছে। এক এক রাতে ফাঁসি দিতে দিতে অনেকের মস্তিষ্ক নষ্ট হয়ে যায়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বাবা হত্যার বিচার চাইতে পারিনি, একটা মামলাও করতে পারিনি। আমাকে বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘মিডিয়াতে কী লিখলো আর টক শোতে কী বললো, ওসব নিয়ে আমি দেশ পরিচালনা করি না, আমি দেশ পরিচালনা করি অন্তর থেকে। আমার বাবা এই দেশ স্বাধীন করেছেন। এই দেশের দরিদ্র মানুষের জন্য বছরের পর বছর তিনি জেল খেটেছেন। নিজের জীবনটাকে উৎসর্গ করেছেন। সেই মানুষগুলোর জন্য কী কাজ করতে হবে, এটা শিখেছি আমার বাবার কাছ থেকে মায়ের কাছ থেকে; আমি সেটাই কাজে লাগাই। মানুষ তার সুফল পাচ্ছে কি না সেটা যাচাই করি। কে কী বলল ওটা শুনে হতাশ হওয়া বা উৎসাহিত হওয়া আমার সাজে না, আমি করিও না। এটাই হলো বাস্তবতা।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আছে কিছু লোক, আছে না? যারে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা। এই অবস্থায় কিছু লোক ভোগে। আর কিছু লোক আছে হতাশায় ভোগে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মানুষের একটা বদ অভ্যাস হয়ে গেছে কথায় কথায় হতাশ হওয়া। আর যতই কাজ করি তারপরেও বলবে, এটা হলো না কেন, ওটা হলো না কেন? আমি একটু বলবো, এটা না বলে আগে কী ছিল আর এখন কী আছে সেটা দেখলেই তো হয়ে যায়। সেটা দেখতে পারবে না।’