নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ৯:৪০ : পূর্বাহ্ণ
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইউমের লাশ ভারতের নাগপুর থেকে দেশে এসে পৌঁছেছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ১০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তার মরদেহ ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে। বিমানবন্দর থেকে তার মরদেহ রাজধানীর উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের বাসায় নেয়া হয়েছে।
ক্যাপ্টেন নওশাদের মরদেহে শ্রদ্ধা জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী ও সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বিমানের এমডি ও সিইও ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামালসহ বিমান ও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, আজ বাদে জোহর বিমানের প্রধান কার্যালয় বলাকায় তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
গত সোমবার ভারতের নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বিমানের এই পাইলট।
গত বৃহস্পতিবার বিমানের বিজি-২২ ফ্লাইটটি ওমান যায়। সেখান থেকে স্থানীয় সময় রাত ২টা ৩০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসার কথা থাকলেও ওই ফ্লাইটটি ভোর সাড়ে ৬টায় ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়।
ঢাকা আসার পথে ভারতের আকাশসীমায় থাকা অবস্থায় বিমানটির পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইউম হার্ট অ্যাটাক করেন। এরপর ফ্লাইটের জরুরি অবতরণ করানো হয়।
কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল বিমানটিকে নাগপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করার সিগন্যাল দিলে কো-পাইলটই বিমানটিকে অবতরণ করান। বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের বিমানটিতে ১২৪ জন যাত্রী ছিলেন। তারা সবাই নিরাপদেই ছিলেন।
নাগপুরের বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণের পর পাইলট নওশাদকে সেখানকার কিংসওয়ে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
শনিবার রাতেই নওশাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। মস্তিষ্কে প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় তিনি ‘কোমায়’ চলে যান। টানা ৪৮ ঘণ্টার বেশি সময় তিনি কোমায় ( সম্পূর্ণ অচেতন) ছিলেন।
এই অবস্থা থেকে জীবনের ডাকে আর ফিরতে পারলেন না তিনি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩০ আগস্ট মারা যান নওশাদ। তার বয়স হয়েছিল ৪৪ বছর।
নওশাদ আতাউল কাইউম ১৯৭৭ সালের ১৭ অক্টোবর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০০২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে পাইলট হিসেবে যোগদান করেন।
তিনি ২০০০ সালের ১৩ নভেম্বর ক্যাডেট পাইলট হিসেবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে কাজে যোগদান করেন এবং প্রশিক্ষণ শেষে ২০০২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর এফ-২৮ এর ফার্স্ট অফিসার পদে পদোন্নতি লাভ করেন।
তিনি ২০০৬ সালের ১৪ মে এয়ারবাস-এ-৩১০ উড়োজাহাজের ফার্স্ট অফিসার এবং ২০১১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বোয়িং ৭৭৭ এর ফার্স্ট অফিসার হন। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ২৫ জানুয়ারি বোয়িং ৭৩৭ এর ক্যাপ্টেন হিসেবে পদোন্নতি পান এবং মৃত্যুর পূর্ববর্তী সময় পর্যন্ত তিনি এ পদেই কর্মরত ছিলেন।
তারা বাবা আব্দুল কাইউমও একসময় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ক্যাপ্টেন ছিলেন।
পাঁচ বছর আগে ১৪৯ যাত্রী আর সাত ক্রুর জীবন বাঁচিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন নওশাদ। পরে ২০১৭ সালে ক্যাপ্টেন নওশাদকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে প্রশংসাপত্র পাঠিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ক্যাপ্টেন রন অ্যাবেল।