নিজস্ব প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২৯ আগস্ট, ২০২১ ৭:৩০ : অপরাহ্ণ
হেফাজতে ইসলামের ভারপ্রাপ্ত আমির আল্লামা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরীকে ১০ দিনের মাথায় তড়িঘড়ি করে ভারমুক্ত করা হয়েছে। তাকে এবার নতুন আমির নির্বাচিত করা হয়েছে।
আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের মাখজানুল উলুম মাদ্রাসায় হেফাজতের মজলিশে শূরা (নীতিনির্ধারণী) ও কার্যনির্বাহী কমিটির যৌথ বৈঠকে মুহিবুল্লাহ বাবুনগরীকে আমির হিসেবে নির্বাচন করা হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ৮৭ বছর বয়সী মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী হেফাজতের আমিরের দায়িত্ব নিতে অপারগতা জানিয়েছিলেন। এমনকি তাকে আমির পদে দায়িত্ব না দিতে তার পরিবার থেকেও হেফাজতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছিল।
কিন্তু হেফাজতের নেতৃবৃন্দ তা অগ্রাহ্য করে মুহিবুল্লাহ বাবুনগরীর হাতে জোরপূর্বক আমিরের দায়িত্ব অর্পণ করেন।
গত ১৯ আগস্ট হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর মৃত্যুতে শূন্য হওয়া পদে ভারপ্রাপ্ত আমির হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মুহিবুল্লাহ বাবুনগরীকে।
হেফাজতের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, সেদিন মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী ভারপ্রাপ্ত আমিরের দায়িত্বও নিতে চাননি। তাকে সম্মতি ছাড়া তাকে ভারপ্রাপ্ত আমিরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। একইভাবে তাকে এবারও আমিরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
হেফাজতের দায়িত্বশীল সূত্রটি জানায়, মুহিবুল্লাহ বাবুনগরীকে প্রথমে ভারপ্রাপ্ত আমির ও পরে নতুন আমির করার জন্য প্রথমে প্রস্তাব তুলেন হেফাজতের মহাসচিব নুরুল ইসলাম জিহাদি। তিনি হেফাজতের মজলিশে শূরা (নীতিনির্ধারণী) কমিটির কারও মতামত না নিয়ে আগ বাড়িয়ে সবার আগে মুহিবুল্লাহ বাবুনগরীকে হেফাজতের শীর্ষ নেতৃত্বের আসনে বসার প্রস্তাব দেন। আর তার প্রস্তাবে হেফাজতের মজলিশে শূরার সদস্যরা পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে সায় দিয়েছেন।
হেফাজতের অপর একটি সূত্র জানায়, সংগঠনের মহাসচিব হয়তো কোনো প্রভাবশালী মহলের চাপে পড়ে বয়সের ভারে ন্যুব্জ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরীকে আমির পদে বসাতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হওয়ায় এবং তাকে রাজনৈতিভাবে প্রভাবিত করার সুযোগ কম থাকার কারণে প্রভাবশালী মহলটি তাকে বেঁচে নিয়েছেন বলে মনে করছেন হেফাজতের দায়িত্বশীল নেতারা।
হেফাজতের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মীর ইদরীস বলেন, ‘মুহিবুল্লাহ বাবুনগরীকে আমির করার প্রস্তাবটি তুলেছেন হেফাজতের মহাসচিব। হয়তো তিনি অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হওয়ায় উনাকে আমিরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’
প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী আমিরের দায়িত্ব নিতে চাননি। উনাকে আমিরের পদে দায়িত্ব না দিতে উনার পরিবার থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কিন্তু উনার বিকল্প না থাকাতে হেফাজতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উনাকে আমিরের দায়িত্ব দিয়েছেন।’
মীর ইদরীস জানান, বৈঠকে হেফাজতের মজলিশে শূরার ৮ সদস্য এবং কার্যনির্বাহী কমিটির ২০ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী হেফাজতে ইসলামের আমির প্রয়াত আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর মামা। তার বাড়ি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার বাবুনগর গ্রামে।
গত ৭ জুন হেফাজতের নতুন ঘোষিত কমিটির প্রধান উপদেষ্টা করা হয়েছিল মুহিবুল্লাহ বাবুনগরীকে। এর আগে আহমদ শফির নেতৃত্বাধীন হেফাজতের কমিটিতে সিনিয়র নায়েবে আমির ছিলেন তিনি।
জানা গেছে, মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী আগে ইসলামী ঐক্যজোটের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। দলটি বিএনপি জোট ছাড়লে তিনি ইসলামী ঐক্যজোটের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।