শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা আইন-আদালত

বঙ্গবন্ধুর খুনি মোশতাকের ছেলে ও নাতির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা



প্রতিনিধি, কুমিল্লা প্রকাশের সময় :২৫ আগস্ট, ২০২১ ৭:০১ : অপরাহ্ণ

বঙ্গবন্ধুর খুনি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার দশপাড়া গ্রামের খন্দকার মোশতাক আহমেদের ছেলে খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ বাবু ও নাতি (বাবুর ছেলে) খন্দকার ইফতেখার আহমেদ শাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

আজ বুধবার বিকেলে কুমিল্লার ৩ নম্বর আমলী আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. গোলাম মাহবুব খান এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করতে দাউদকান্দি থানা পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে অভিযুক্ত দুই আসামি দীর্ঘদিন কানাডায় পালিয়ে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন বলে জানা গেছে।

জালিয়াতি করে পরিবারের সদস্যদের সম্পত্তি বিক্রিসহ নানা ধরনের প্রতারণার অভিযোগে করা মামলায় তাদের বিরুদ্ধে এ পরোয়ানা জারি করা হয়।

মামলার বাদী ওই সম্পত্তির ওয়ারিশ ও খন্দকার মোশতাকের ভাগিনা খন্দকার জাবির আহমেদ সরোয়ার।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খুনি মোশতাকের পিতা খন্দকার কবির উদ্দিন আহমেদ ছিলেন একজন পীর। মৃত্যুকালে তিনি পাঁচ ছেলে এবং পাঁচ মেয়েসহ রেখে গেছেন বিশাল সম্পত্তি। এরমধ্যে পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুসারে কিছু সম্পত্তি কল্যাণমূলক কাজের জন্য ট্রাস্টের নামে লিখে দেওয়া হয়।

এছাড়া ওয়ারিশ সূত্রে বংশের সব সদস্যরা বাকি সম্পত্তির মালিক হলেও কবির উদ্দিনের সপ্তম সন্তান খুনি মোশতাকের একমাত্র ছেলে খন্দকার ইশতিয়াক আহম্মেদ বাবু বংশের সব সদস্যদের সম্পত্তি জোরপূর্বক বেদখল করে রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

শুধু তাই নয় খন্দকার কবির উদ্দিনের নামে ট্রাস্টের স্বঘোষিত চেয়ারম্যান হয়ে বাবু ওই স্টেটের কার্যালয়ে নিজের এবং স্ত্রী সন্তানদের ছবি টানিয়ে রেখেছেন। কিন্তু কবির উদ্দিনের অন্যসব ওয়ারিশগণকে ওই সম্পত্তি এবং বাড়িসহ মাজারে প্রবেশ করতে দেয় না বাবু।

ট্রাস্ট এবং দাদার সম্পত্তি দখলে রাখতে মোশতাক পুত্র এলাকায় একটি বাহিনী গঠন করে রেখেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। কানাডায় বসে ওই বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করছেন তিনি। এরই মাঝে বেশ কিছু সম্পত্তি জাল দলিল এবং ভুয়া স্বাক্ষরে বিক্রয় করে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

সম্পত্তির ন্যায্য হিস্যা এবং স্টেটের উত্তরাধিকারীর অংশিদারিত্ব পেতে কবির উদ্দিনের ওয়ারিশ খন্দকার জাবির আহাম্মেদ সারোয়ার গত বছরের সেপ্টেম্বরে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় ইশতিয়াক আহমেদ বাবু, তার ছেলে ইফতেখার আহমেদ শাদ ও কেয়ার টেকার নিজামুদ্দিনকে আসামি করা হয়।

মামলার বাদী খন্দকার জাবির আহাম্মেদ সারোয়ার অভিযোগ করে বলেন, খুনি মোশতাকের ছেলে খন্দকার ইশতিয়াক আমাদেরকে ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত করছেন। তিনি কানাডায় বসে এলাকার একটি সন্ত্রাসী বাহিনীর মাধ্যমে স্টেটসহ অন্য সব সম্পত্তির ভোগ দখল ও সুবিধা হাতিয়ে নিচ্ছেন। আমাদের ওয়ারিশদের স্বাক্ষর জাল করে বেশ কিছু সম্পত্তি বিক্রি করেছেন।

এছাড়া আরো কিছু সম্পত্তি বিক্রির পায়তারা করছে। তার নির্দেশে এসব জালিয়াতির কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন মোশতাকের বাড়ির কেয়ারটেকার নিজামুদ্দিন।

তিনি বলেন, কেয়ার টেকার নিজামুদ্দিনই মোশতাক পুত্রের সব নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে থাকেন। কানাডায় বসে ওই কেয়ারটেকারের মাধ্যমেই বাহিনী নিয়ন্ত্রণসহ এলাকার আধিপত্য ধরে রেখেছেন মোশতাক পুত্র ইশতিয়াক।

দাউদকান্দি থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, মামলার আসামি খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ বাবু ও খন্দকার ইফতেখার আহমেদ শাদ বিদেশে পলাতক আছেন। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা হাতে পেলে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে পরামর্শক্রমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর