রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৩ আগস্ট, ২০২১ ৯:৪৫ : পূর্বাহ্ণ
গত প্রায় একমাসে গোটা আফগানিস্তান দখল করে নিয়েছে তালেবান। রাজধানী কাবুল-সহ দেশটির ৯৮ শতাংশ দখল করলেও এখনও উত্তর-মধ্যাঞ্চলীয় পাঞ্জশির প্রদেশ দখলে আনতে পারেনি তারা। ওই এলাকা দখল করতে গিয়ে গত কয়েক দিনে বাধার মুখে পড়তে হয়েছে তাদের। তবে এবার পাঞ্জশির দখলের জন্য সর্বশক্তি দিয়ে নামার ঘোষণা দিয়েছে তালেবান।
জানা গেছে, পাঞ্জশির দখল করতে ইতোমধ্যেই রওনা হয়েছে শত শত তালেবান যোদ্ধা।
আফগানিস্তানে একের পর এক প্রদেশ বিনা যুদ্ধে আত্মসমর্পণ করলেও সে পথে হাঁটেনি হিন্দুকুশ পর্বতের পাদদেশে অবস্থিত পাঞ্জশির উপত্যকা। ১৫ আগস্টের পরও তালেবানের দখলের বাইরে ছিল এই এলাকার বেশ কয়েকটি প্রদেশ।
আহমেদ মাসুদের নেতৃত্বে তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াই হচ্ছে সেখানে। আশরাফ গনির শাসনামলের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহও রয়েছেন তার সঙ্গে। সাবেক সরকারের কিছু সৈন্য পাঞ্জশিরে সমবেত হয়ে প্রতিরোধ চালানোর ঘোষণা দিয়েছে। কাবুল থেকে ১৫০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত এ এলাকাটি তালেবানবিরোধী দুর্গ হিসেবে পরিচিত।
গতকাল রোববার রাতে তালেবানের পক্ষ থেকে টুইটবার্তায় বলা হয়, স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তারা শান্তিপূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ তুলে দিতে অস্বীকার করার পর ইসলামি আমিরাতের শত শত মুজাহিদিন নিয়ন্ত্রণ নিতে পাঞ্জশির যাচ্ছে।
ওই এলাকার নিয়ন্ত্রণে থাকা আহমেদ মাসুদ বলেছেন, তিনি আশা করেন যে তালেবানের সাথে শান্তিপূর্ণ আলোচনা হবে। তবে তার বাহিনী যুদ্ধ করতে প্রস্তুত।
তিনি টেলিফোনে রয়টার্সকে জানান, আমরা তালেবানকে বোঝাতে চাই যে, আলোচনাই একমাত্র পথ হওয়া উচিত। তিনি পাঞ্জশিরে নিয়মিত সামরিক ইউনিট ছাড়াও বিশেষ বাহিনীর সদস্যদের জড়ো করেছেন।
১৯৮০-এর দশকে সোভিয়েতবিরোধী প্রতিরোধ আন্দোলনের অন্যতম নেতা আহমদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমেদ মাসুদ বলেন, তালেবান যদি উপত্যকায় হামলা চালানোর চেষ্টা করে, তবে তার বাহিনী প্রস্তুত।
আফগানিস্তানের সেনা, বিশেষ বাহিনীর পাশাপাশি স্থানীয় মিলিশিয়া যোদ্ধাদের নিয়ে পাঞ্জশিরে নিজের বাহিনী গড়ে তুলেছেন মাসুদ।
গতকাল আহমেদ মাসুদ এক সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে সাবেক আফগান সরকারের বহু সেনা পাঞ্জশিরে এসেছেন।
তবে তালেবান বাহিনী তাদের অভিযান শুরু করেছে কিনা তা নিয়ে কিছু সংশয় রয়ে গেছে। তালেবানের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ইতোমধ্যেই পাঞ্জশিরে হামলা শুরু হয়েছে। তবে মাসুদের এক সহকারী জানান, এখনো কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না।
একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, আটক করা সরকারি ট্রাকের একটি বহরে তালেবানের পতাকা উড়িয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।
গত ১৫ আগস্ট তালেবান বাহিনীর হাতে কাবুলের পতন ঘটে। এরপর পাঞ্জশিরের সীমান্তে থাকা বাগলান প্রদেশের তিনটি জেলা থেকে তালেবান বাহিনীকে তাড়িয়ে দেয়া হয় বলে খবরে বলা হয়।
সূত্র: আল জাজিরা