নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২১ আগস্ট, ২০২১ ৬:০১ : অপরাহ্ণ
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার আগে ঢাকার সাবেক মেয়র প্রয়াত মোহাম্মদ হানিফ তার ছেলে সাঈদ খোকনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে যে তথ্য পাঠিয়েছিলেন, তা কেন আমলে নেওয়া হয়নি সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা নিয়ে আমরা একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছি। সেটা হচ্ছে, ঢাকার সাবেক মেয়র প্রয়াত মোহাম্মদ হানিফের ছেলে সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন গতকাল একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। হামলার আগের দিন তার বাবা হানিফ তাকে আগেই বলেছিলেন যে, নেত্রীর ওপর হামলা হতে পারে, এই তথ্যটা নেত্রীকে জানাও।’
তিনি বলেন, ‘সাঈদ খোকন ঘটনার আগের দিন নেত্রীকে জানিয়েছেন যে, আপনার বাসায় বা যাতায়াত পথে আক্রমণ হতে পারে। কিন্তু এই বিষয়টা শেখ হাসিনা আমলে নেননি।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব প্রশ্ন রাখেন, ‘আমাদের কাছে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, কেন এই বিষয়টা তিনি (শেখ হাসিনা) গুরুত্ব দিলেন না? আমলে নিলেন না?’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এই সরকারের আন্দোলনের ফসল এক-এগারোর সরকারের সময় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার চার্জশিটে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নাম আসেনি। ওই সময় অনেক তদন্ত করেছে। কিন্তু এই সরকার ক্ষমতায় এসে তাদের নিজস্ব লোককে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বানিয়ে তদন্ত করে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নাম দিয়েছে। এতে স্পষ্ট হয় এটা একদম পরিকল্পিত, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘সে সময় বিএনপি ক্ষমতায় ছিল কিন্তু তারা বিএনপিকে কোনো সহযোগিতা করেনি। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সুধাসদনে শেখ হাসিনাকে দেখতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তদন্তের বিষয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন তাও তারা করেন নাই। সবকিছু বিবেচনা করে দেখলে এবং গতকালের সাঈদ খোকনের তথ্য থেকে বোঝা যায়, এখানে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য করা হয়েছে।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এই সরকার মুফতি হান্নানকে নির্যাতন করে স্বাক্ষর নিয়েছিল কিন্তু পরবর্তীকালে তিনি সেটা অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন আমাকে নির্যাতন করে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায়, এই সরকার জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। সাঈদ খোকন যে তথ্য দিয়েছিলেন, তারা তাতে সতর্ক হতে পারতেন বা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে পারতেন।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আরেকটি বিষয় হলো, তাদেরকে যে জায়গায় সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল সেই জায়গায় না করে হঠাৎ করে অন্য জায়গায় করে। এ থেকে বোঝা যায় যে, হামলা সাজানো ছিলো। এবং এই হামলার মাধ্যমে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করতে উদ্দেশ্য ছিল। যেটা আবারও প্রমাণিত হলো গতকাল সাঈদ খোকনের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘পরিস্থিতি দিন দিন নৈরাজ্যের দিকে ধাবিত হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক, স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য তাঁর অফিসে তালা দেওয়া হচ্ছে, ভাঙচুর করা হচ্ছে। মানে, একটি ভয়ঙ্কর গুণ্ডামির রাজ্য তৈরি করছে।’