নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :৭ আগস্ট, ২০২১ ৯:১৭ : অপরাহ্ণ
ব্যাট হাতে ১০৪ রানের পুঁজি পেয়েছিলো বাংলাদেশ। ম্যাচ বাঁচাতে বল হাতে দুর্দান্ত কিছু করতে হতো সাকিব-মুস্তাফিজদের। কিন্তু চতুর্থ ওভারে এসে পাঁচ ছক্কা হজম করেন সাকিব। ওই ওভারেই ম্যাচ বেরিয়ে যায় হাত থেকে। তারপরও মুস্তাফিজ-মাহেদির দুর্দান্ত লড়াইয়ে ৩ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের বেঁধে দেওয়া ১০৫ রানের টার্গেট পার হতে ৭ উইকেট খোয়াতে হয়েছে অজিদের। শেষ পর্যন্ত তিন উইকেটের ব্যবধানে কষ্টার্জিত জয় পেয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়ায় অস্ট্রেলিয়া।
তবে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম তিন টি-টোয়েন্টিতে হেরে আগেই সিরিজ হারায় অস্ট্রেলিয়া।
আজ (৭ আগস্ট) শনিবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চতুর্থ ম্যাচে টাইগারদের ৩ উইকেটে হারিয়ে জয়ে ফিরল সফরকারীরা।
৫ ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ এখন ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে।
আজ বাংলাদেশের ১০৪ রানের জবাবে খেলতে নেমে ১৯ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১০৫ করে অজিরা।
মিরপুর শেরে বাংলায় রান তাড়ায় নেমে শুরুতেই ধাক্কা খেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।
প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে অজি অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েডকে (২) এলবিডাব্লিউ করেন মেহেদি হাসান।
চতুর্থ ওভারেই রূদ্ররূপে দেখা দেন ড্যান ক্রিশ্চিয়ান। সাকিবের এক ওভারে পাঁচ ছক্কা মারেন। প্রথম তিন বলে টানা তিন ছয়ের পর চতুর্থ বল ডট। পঞ্চম ও ৬ষ্ট বলে আরও দুটি ছক্কা হজম করেন সাকিব। ক্যারিয়ারে এই প্রথমবার তিনি এক ওভারে ৫টি ছক্কা খেলেন।
পরের ওভারেই অপর ওপেনার বেন ম্যাকডারমটকে এলবিডাব্লিউ করেন নাসুম আহমেদ। ভাঙে ৪৪ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি। ৬ষ্ঠ ওভারে পাঁচ ছক্কা মারা ক্রিশ্চিয়ানকে থামান মুস্তাফিজ। তিনি ১৫ বলে ১ চার ৫ ছক্কায় ৩৯ রানের ঝড় তুলে শামীম হোসেনের তালুবন্দি হয়ে ফিরেন।
৮ম ওভারে সাকিব বোলিংয়ে ফিরে শেষ বলে মোইজেস হেনরিক্সকে (৪) রান-আউট করেন। দশম ওভারে আবারও বোলিংয়ে এসে শিকার ধরেন দ্য ফিজ। ৬ বলে ১ রান করে ফিরেন অ্যালেক্স ক্যারি। লেগ বিফোরের বিপক্ষে রিভিউ নিয়ে লাভ হয়নি। ৬৩ রানে অজিদের ইনিংস অর্ধেক শেষ হয়।
অজিদের ইনিংসের ৬ষ্ঠ আঘাত হানেন মেহেদি। ভালো ফর্মে থাকা মিচেল মার্শকে (১১) তিনি বোল্ড করে দেন।
৬৫ রানে অজিদের ৬ উইকেট নেই হয়ে যায়। জমে ওঠে ম্যাচ। শেষ ৭ ওভারে প্রয়োজন হয় ২৪ রানের।
১৪তম ওভারে নাসুমকে ছক্কা মেরে স্কোর এগিয়ে নেন অ্যাস্টন আগার। ১৬তম ওভারে এসেই আগারের কাছে বাউন্ডারি হজম করেন সাকিব।
শরীফুলের করা ১৮তম ওভারের প্রথম বলে বাউন্ডারি মেরে দলকে জয়ের আরও কাছে নিয়ে যান আগার। পরের বলেই ২৭ বলে ২ চার ১ ছক্কায় ২৭ রান করা আগারের ক্যাচ অসাধারণভাবে তালুবন্দি করেন শামীম।
মুস্তাফিজের করা ১৯তম ওভারের শেষ বলে ৩ উইকেটে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়া। আজও ৪ ওভারে ৯ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজ।
এর আগে উইকেটের সুবিধা কাজে লাগাতে টস জিতেই ব্যাটিং নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু আগে ব্যাটিংয়ের সুবিধাটা কাজে লাগাতে পারেননি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। ব্যাটিং বিপর্যয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১০৪ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
সর্বোচ্চ ২৮ রান করেছেন মোহাম্মদ নাঈম। আর শেষের দিকে ১৬ বলে ২৩ রানের অতি প্রয়োজনীয় ইনিংস খেলেন মাহেদি।
মন্থর উইকেটে মোটামুটি ভালো শুরুও পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সময়ের সঙ্গে একে একে হতাশ করলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা।
উইকেটে আসা-যাওয়ার মিছিলে ব্যস্ত ছিলেন সৌম্য,মাহমুদউল্লাহ, সোহান, শামীমরা।
গত তিন ম্যাচে ধারাবাহিক ব্যর্থ হওয়া সৌম্য সরকার এই ম্যাচেও হতাশ করেছেন। মাত্র ৮ রান করেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান।
পরে সাকিব নেমে আজ তেমন সুবিধা করতে পারেননি। ২৬ বল খেলে মাত্র ১৫ রান করে আউট হয়ে যান এই অলরাউন্ডার।
দলীয় ৫১ রানের মাথায় আউট হয়ে যান অধিনায়ক রিয়াদও।
কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন ওপেনিংয়ে নামা মোহাম্মদ নাইম শেখ। কিন্তু তিনিও দলীয় ৬৮ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ২৮ রান করে ফিরে যান।
আফিফ হোসেন বড় ইনিংস খেলার ইঙ্গিত দিলেও সুবিধা করতে পারেননি। ১৭ বলে ২০ রানের একটি ইনিংস খেলে আউট হন।
আর কেউ বলার মতো স্কোর করতে পারেননি।
অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট শিকার করেন পেসার অ্যান্ড্রু টাই এবং সিরিজে প্রথমবার খেলতে নামা লেগস্পিনার মিচেল সোয়েপসন। এছাড়া দুটি উইকেট পান জশ হ্যাজলউড ও একটি নেন অ্যাশটন অ্যাগার।