নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :৬ আগস্ট, ২০২১ ১০:৫০ : অপরাহ্ণ
লক্ষ্য বড় নয়। জিততে মাত্র ১২৮ রান করতে হতো অস্ট্রেলিয়াকে। কিন্তু এই রানই তাড়া করে জিততে পারেনি তারা। মিচেল মার্শের প্রতিরোধের পর মুস্তাফিজ-শরিফুলদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথমবার জয়ের ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশ।
সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়াকে ১০ হারিয়েছে বাংলাদেশ। পাঁচ ম্যাচের সিরিজ দুই ম্যাচে হাতে রেখেই ৩-০ ব্যবধানে জিতল লাল সবুজের দল।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচটিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১২৭ রান করেছে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫০ রান করেছেন মাহমুদউল্লাহ।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অভিষেকে হ্যাটট্রিক করেন নাথান এলিস। শেষ ওভারে মাহমুদউল্লাহ, মুস্তাফিজ ও মেহেদীকে আউট করে নিজের অভিষেক ম্যাচ হ্যাটট্রিকে রাঙালেন এলিস। জবাব দিতে নেমে নির্ধারিত ওভারে ১১৭ রানে থামে অস্ট্রেলিয়া।
রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে অসিদের ওপেনিং জুটি ভাঙেন নাসুম আহমেদ। তরুণ এই স্পিনারের বল ম্যাথু ওয়েড শরীর ঘুরিয়ে পুল করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বল লাফিয়ে ব্যাটের ওপরের দিকে লেগে সহজ ক্যাচ যায় সেই শর্ট ফাইন লেগে। সেখান ছিলেন শরিফুল। ক্যাচ নিতে ভুল করেননি তিনি। ৫ বলে ১ রান করে আউট ওয়েড। দলীয় ৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া।
অবশ্য দ্বিতীয় উইকেটেই শুরুর ধাক্কা সামলে নেয় অস্ট্রেলিয়া। বরাবরের মতো এই ম্যাচেও হাল ধরেন মিচেল মার্শ। দ্বিতীয় উইকেটে ম্যাকডারমোর্টকে নিয়ে ৬৩ রানের জুটি গড়েন তিনি। ওই জুটিতেই মূলত শুক্ত অবস্থান করে নেয় অস্ট্রেলিয়া।
থিতু হওয়া ওই জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। ১৪তম ওভারে ম্যাকডারমোর্টকে বোল্ড করেন তিনি। দুই ছক্কায় ৪১ বলে ৩৫ রান করে ফেরেন এই ওপেনার।
সতীর্থ ফিরলেও উইকেটে থিতু হয়ে ছিলেন মার্শ। ৪৫ বলে ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। তবে হাফসেঞ্চুরির পর বেশিদূর যেতে পারলেন না। পরের ওভারেই তাঁকে ফিরিয়ে দেন শরিফুল। ৪৭ বলে ৫১ রান করে আউট হন মার্শ। অভিজ্ঞ মার্শ ফিরলে শেষ দিকে ১১৭ রানে থামে অসিরা।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই অসি বোলারদের তোপের মুখে পড়ে বাংলাদেশ। দলীয় ৩ রানের মাথায় সাজঘরে ফিরে যান দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও নাঈম শেখ। এরপর ক্রিজে আসা সাকিব আল হাসান ও আফিফ হোসেন ম্যাচের হাল ধরেন। তবে প্রথম দুই ম্যাচের মতো ইনিংস বড় করতে পারেননি সাকিব। তিনি ১৭ বলে ২৬ রান করে অ্যাডাম জাম্পার বলে অ্যাস্টন অ্যাগারের হাতে তালুবন্দি হয়ে মাঠ ছাড়েন।
২৬ রানের ইনিংসে চারটি চার মেরেছেন তিনি। এরপর আফিফ হোসেন ধ্রুবর সঙ্গে জুটি গড়েন মাহমুদউল্লাহ।
মাহমুদউল্লাহ খেলেছেন মাথা ঠাণ্ডা করে, অপরদিকে ব্যাট চালিয়ে খেলেছেন আফিফ। তবে আফিফ ভুল করে এক রান নিতে গিয়ে পড়েছেন রানআউটের কবলে। ১৩ বলে একটি করে চার-ছক্কায় আফিফের ১৯ রানের ইনিংস থামে। প্রথম ম্যাচের মতো আজ তৃতীয় ম্যাচেও সুবিধা করতে পারেননি শামীম পাটোয়ারি।
এরপর নুরুল হাসান সোহান যোগ দেন টাইগার ক্যাপ্টেনের সঙ্গে। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনিও। নিজের খেলা তৃতীয় বলে লংঅনের ওপর দিয়ে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন তিনি। তার ইনিংসটিও থেমেছে রানআউটে। এই আউটের দায় মাহমুদউল্লাহর। কভারে ঠেলে দিয়েই টাইগার অধিনায়ক রানের জন্য কল দেন, কিন্তু সোহান পৌঁছার আগেই সরাসরি থ্রোতে উইকেট ভেঙে দেন হেনড্রিকস। মাহমুদউল্লাহ একটা প্রান্ত তবু ধরে ছিলেন। দেখে শুনে খেলে হাফসেঞ্চুরিও তুলে নেন। শেষ পর্যন্ত ইনিংসের ২ বল বাকি থাকতে অভিষিক্ত পেসার এলিসের বলে বোল্ড হন ৫২ রানে।