শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

লকডাউনে জীবিকার হিসেব মিলছে না নিম্ন আয়ের মানুষের



রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৮ জুলাই, ২০২১ ২:৪০ : অপরাহ্ণ

চলছে কঠোর লকডাউন। কাজ নেই সিএনজি অটোরিকশাচালক গোলাম মোস্তফার। তবু নিয়ম করে মেরুল বাড্ডার গ্যারেজে এসে রুজি-রুটির বাহনের যত্ন করেন প্রতিদিন। গেল দেড় বছরে উল্টে-পাল্টে গেছে তার জীবনের গল্প। ব্যয় সংকুলান না করতে পেরে পুরো পরিবারকেই তিনি পাঠিয়ে দিয়েছেন গ্রামে।

এই খরুচে শহরে লকডাউনে আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পেটের ক্ষুধা মেটাতে না পেরে গোলাম মোস্তফার মতো অনেকেই পরিবার গ্রামে পাঠিয়ে দিয়েছেন। কেউ হয়ে গেছেন একেবারেই নিঃস্ব। শুধু এবারের লকডাউন নয়, দীর্ঘ দেড় বছরের থেমে-থেমে চলার প্রভাবে অনেকেরই পিঠ ঠেকেছে দেয়ালে।

নদী ভাঙনের শিকার হয়ে পরিবার নিয়ে ঢাকায় ভাগ্য বদলের আশায় এসেছিলেন আব্দুর রব। লকডাউনে এই মায়াহীন শহরে সবাইকে নিয়ে অনিশ্চয়তায় কাটছে তার এক একটি দিন। আব্দুর রব জানান, ৩১ বছর আগে বেবি ট্যাক্সি চালানো দিয়ে শুরু করে এই পেশাতেই ভাল চলছিল জীবন। কিন্তু এখন মিলছে না জীবনের হিসেব।

কঠোর লকডাউনেই পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে চা-বিস্কুট-পান নিয়ে ফুটপাতে বসেছেন আনোয়ার হোসেন। করোনার আগে ছিলেন ডেকোরেটরের কাজে। এখন বিয়েশাদি বন্ধ তাই কাজ নেই। শেষ সম্বল মাত্র দুই হাজার টাকার পুঁজিতে শুরু করেছেন এই কাজ।

মহামারির এই সময়ে এদের মতো এমন লাখো নিম্ন আয়ের মানুষ কাজ হারিয়েছেন, হয়ে গেছেন একেবারেই অসহায়। সবচেয়ে বড় ভুগছেন ছোট কারবারীরা। খোলা-বন্ধের দোলাচলে অনেকেই হারিয়েছেন মূলধন। কেউ কেউ হয়ে গেছেন শ্রমিক। কিন্তু, মিলছে না কাজও

অর্থনীতিবিদদের মতে, ঢাকা শহরে একেবারেই নিম্নমানের জীবন ব্যবস্থাপনায়ও ৪ থেকে ৫ জনের একটি পরিবারের চলতে হলে দরকার অন্তত ১৫ হাজার টাকা। যে হিসেব মিলছে না নিম্ন আয়ের মানুষের।

অর্থনীতিবিদ ড. আবু ইউসুফ বলেন, সরকার প্রায় ২৩ টি ভর্তুকি প্যাকেজ শুরুতে দিয়েছে লকডাউনে। এরপর আবার আরও পাঁচটা প্যাকেজ দিয়েছে যা শুধুমাত্র নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য। কিন্তু তার কতোটা একেবারের প্রান্তিক পর্যায়ে নিম্ন আয়ের মানুষের হাতে গেছে তা কিন্তু নিশ্চিত না।

অবশ্য এতসব কঠিন হিসেব-নিকেশ বোঝেন না ছুটা বুয়া হিসেবে কাজ করা আনোয়ারা বা সুখীর মত মানুষরা। কাজ করে খাওয়া হাতগুলো এখন বিত্তবানদের সামনে অনুগ্রহ খোঁজে। এমনকি গেল বছর যারা ব্যক্তি পর্যায়ে ত্রাণ দিয়েছিলেন তারাও এবার ধুঁকছেন অর্থকষ্টে।

এসব নিম্ন আয়ের মানুষের কপালে এখন চিন্তার ভাঁজ, কীভাবে কাটাবেন নেই দুঃসময়।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর