নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২৫ জুলাই, ২০২১ ২:৫৩ : অপরাহ্ণ
ঈদের ছুটির পর সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে রাস্তায় মানুষ বের হতে শুরু করেছে। কঠোর লকডাউনের তৃতীয় দিনে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে।
রিকশা, মোটরসাইকেল ও বিভিন্ন ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করে মানুষের চলাচল প্রবণতা আগের দুই দিনের তুলনায় বেশি লক্ষ্য করা গেছে।
আজ (২৫ জুলাই) রোববার সকাল ৯টার দিকে রাজধানীর শেওড়াপাড়া, তালতলা, আগারগাঁও, শ্যামলী, কল্যাণপুর, কলেজগেট, বিজয় সরণি, ফার্মগেট ও কাওরান বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
গাবতলী দিয়ে যানবাহন ও মানুষের চলাচল আজ আরও বেড়েছে। চেকপোস্ট থাকলেও লোকজনকে খুব একটা আটকানো যায়নি।
পুরান ঢাকার বাবুবাজার ব্রিজ পার হয়ে আজ সবচেয়ে বেশি মানুষ ও যানবাহন ঢাকায় প্রবেশ করছে। তবে আব্দুল্লাহপুর ও সাইনবোর্ড এলাকায় চাপ কিছুটা কম রয়েছে।
যাত্রাবাড়ী, ফার্মগেট ও মিরপুর এলাকায় রাজপথ ছিলো রিকশার দখলে। প্রাইভেটকারের চলাচল গতকালের তুলনায় ছিল বেশি।
রাজধানীর বিভিন্ন মহল্লার অলিগলিতে ছোটো দোকানপাট খোলা থাকায় সব বয়সী মানষের জটলা চোখে পড়েছে। কোথাও আবার অলি-গলির রেস্টুরেন্টে খাবার পরিবেশন করতেও দেখা গেছে। স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতাও ছিল গত দুই দিনের তুলনায় কম।
সকাল থেকেই সড়কের চেকপোস্টে ছিল সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ সদস্যদের নজরদারি। তবে ঢাকার প্রবেশ পথগুলোতে ছিলো মানুষের চাপ।
রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশ পথে সকাল থেকে দেখা যায় অফিসগামীদের ভিড়। গণপরিবহন না থাকায় চেকপোস্টে আইডি কার্ড দেখিয়ে অনেকে গন্তব্যেরে উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন হেঁটে।
সকাল থেকেই সড়কগুলোতে শত শত ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে। ডাক্তার, নার্স, হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠান কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অনেক মানুষ অফিসে যাওয়ার জন্য রাস্তায় বের হন। কেউ অফিসের গাড়িতে আবার কেউবা ব্যক্তিগত গাড়িতে যাতায়াত করেছেন।
বেশিরভাগ মানুষই যাতায়াত করছেন মোটরসাইকেল ও রিকশায়। বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারী ও মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভরা পেশাগত কারণেই সারা শহর মোটরসাইকেলে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। এদের পাশাপাশি ভাড়ায় চালিত অসংখ্য মোটরসাইকেলও রাস্তায় নেমেছে।
বিভিন্ন চেকপোষ্টে জনসাধারণের বাইরে বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসাবাদ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সঠিক কারণ মিললে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। আর বিনাকারণে বের হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে অনেকে পুলিশের নজর এড়িয়ে ভিন্ন রাস্তা দিয়েও যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে।
রাজধানীর কলেজগেট এলাকায় চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করছিলেন ট্রাফিক ইন্সপেক্টর জহুরুল হক।
তিনি বলেন, ‘চিকিৎসা ও হাসপাতালে রোগী নিয়ে যেতে ও টিকা নেওয়ার জন্য অনেকে বের হয়েছেন। বেশিরভাগ মানুষই প্রয়োজনীয় কাজে বের হয়েছেন। তবে যারা বিনা কারণে বের হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
এদিকে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাটে ঢাকামুখী মানুষ এবং যানবাহনের চাপ বেড়েছে। আজ সকাল থেকে শত শত মানুষ বাংলা বাজার থেকে শিমুলিয়া ঘাটে এসে নেমেছে।
মানুষের সঙ্গে ব্যক্তিগত গাড়ি ও অনেক মোটরসাইকেল পারাপার হয়ে ঢাকায় ফিরছে। এসব মানুষ ও যানবাহন বাবুবাজার ব্রিজ হয়ে ঢাকায় প্রবেশ করছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (২৩ জুলাই) সকাল থেকে শুরু হওয়া কঠোর লকডাউনধ চলবে আগামী ৫ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত। বিধিনিষেধ না মানায় লকডাউনের প্রথম দিন ৪০৩ জন ও দ্বিতীয় দিন ৩৮৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
গত ১৩ জুন লকডাউন আরোপ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ঈদের কারণে ১৪ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত লকডাউন শিথিল করা হয়েছিল। এরপর ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে নতুন করে কঠোর লকডাউন জারি করা হয়।