নিজস্ব প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৯ জুলাই, ২০২১ ৫:৩০ : অপরাহ্ণ
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের লাগাম কোনোভাবেই টেনে ধরা যাচ্ছে না। করোনা শনাক্তে বা মৃত্যুতে একের পর এক রেকর্ড ভাঙছে। ৮ দিন পর আবারও মৃত্যুর রেকর্ড ভেঙেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (রোববার সকাল ৮টা থেকে আজ সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটি করোনায় দেশে সর্বোচ্চ মৃত্যু। এ সময় ১৩ হাজার ৩২১ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।
আজ সোমবার (১৯ জুলাই) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে গত ১১ জুলাই দেশে করোনায় একদিনে সর্বোচ্চ ২৩০ জনের মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছিল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সর্বোচ্চ ৪৫ হাজার ১২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ। এর আগে গত ১৬ জুলাই দেশে সর্বোচ্চ ৪১ হাজার ৯৪৭ জনের নমুনা পরীক্ষার কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এ পর্যন্ত দেশে করোনায় শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ১৭ হাজার ৩১০ জনে। এ পর্যন্ত করোনায় দেশে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৮ হাজার ১২৫ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ঢাকা বিভাগেরই ৭৩ জন। এছাড়া খুলনায় ৫৭, চট্টগ্রামে ৪৩, রাজশাহীতে ১৬, বরিশালে ৬, সিলেটে ৮, রংপুরে ১৭ এবং ময়মনসিংহে ১১ জন মারা গেছেন। মারা যাওয়াদের মধ্যে ১৩৬ জন পুরুষ এবং ৯৫ জন নারী।
বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ১৩৯ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৪৩, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ৩৩, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ৯, ২১ থেকে ৩০ বছরের ৭ এবং ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ জন মারা গেছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৯ হাজার ৩৩৫ জন। এ নিয়ে দেশে মোট ৯ লাখ ৪১ হাজার ৩৪৩ জন করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন।
দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। তারপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। গত বছরের শেষ দিকে এসে সংক্রমণ কমতে থাকে। এ বছরের মার্চ থেকে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য গণপরিবহন চলাচলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। পরে তা আরও দুই দিন বাড়ানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরও কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরু হয়। পরে তা আরও বাড়িয়ে ১৫ জুলাই পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু দেশে এখন সংক্রমণ পরিস্থিতি এপ্রিলের মতো ভয়ংকর রূপ নিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ১ জুলাই থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত দুই সপ্তাহের জন্য কঠোর লকডাউন জারি করেছিল সরকার। কিন্তু এরপরও করোনার সংক্রমণ ক্রমশ বাড়ছে। এ অবস্থায় সরকার ঈদের আগে ৮ দিনের জন্য লকডাউন শিথিল করেছে।