শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা আন্তর্জাতিক

‘লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাত ময়দান



নিজস্ব প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৯ জুলাই, ২০২১ ১২:০৫ : অপরাহ্ণ

সৌদি আরবে আজ জিলহজ মাসের ৯ তারিখ। এ দিনকে বলা হয় আরাফার দিন। পবিত্র হজ। সকালে সেলাইবিহীন সাদা কাপড় পরে হাজীরা সমবেত হয়েছেন ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে। ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা, ওয়াননিমাতা লাকা ওয়ালমুলক, লা শারিকা লাকা’ (আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার) ধ্বনিতে মুখরতি হয়ে উঠেছে পবিত্র মক্কার আরাফাতের ময়দান।

মসজিদুল হারাম থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে ১৪০০ বছর আগে (রাসূল সা.) লক্ষাধিক সাহাবিকে সামনে রেখে ঐতিহাসিক বিদায়হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। ।

বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে সৌদি সরকার দ্বিতীয়বারের মতো স্বল্প পরিসরে হজ পালন অনুষ্ঠান করতে যাচ্ছে। গতবছর ১০ হাজার হজ্বযাত্রী দিয়ে হজ্ব সম্পাদন হলেও এ বছর ৬০ হাজার হজযাত্রীকে লটারির মাধ্যমে হজ পালন করার সুযোগ করে দিয়েছেন সৌদি সরকার।

হাজীদের মিনার তাঁবুতে অবস্থান

হজের কার্যাদি আনুষ্ঠানিকভাবে পালন শুরু হয়েছে গতকাল মিনার তাঁবুতে অবস্থানের মধ্য দিয়ে। এই ময়দানে জোহরের সময় পরপর জোহর ও আসরের নামাজ জামাতের সাথে আদায় করবেন হাজীরা। মুসাফির হওয়ার কারণে নামাজ কসর করবেন (চার রাকাতের স্থলে দুই রাকাত)। নামাজের আগেই মসজিদে নামিরাহ থেকে খুতবা দেবেন নির্ধারিত খতিব।

মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শায়খ ড. বানদার বালিলাহ পাঠ করবেন খুতবা, যা অনুবাদ হবে বাংলাসহ ৯টি ভাষায়। প্রথমবারের মতো খুতবা বাংলা অনুবাদ করবেন মক্কা ইসলামিক সেন্টারের কর্মরত বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার মাওলানা আ ফ ম ওয়াহিদুর রহমান।

আরাফাত থেকে মিনায় ফেরার পথে সন্ধ্যায় মুজদালিফায় মাগরিব ও এশার নামাজ পড়বেন হাজীরা। মুজদালিফায় রাতে খোলা আকাশের নিচে থাকবেন তারা। মিনায় জামারাতে শয়তানকে প্রতীকী পাথর নিক্ষেপের জন্য এখান থেকেই সাতটি কঙ্কর সংগ্রহ করবেন তারা। রাতে সেখানে অবস্থানের পর মঙ্গলবার ফজরের নামাজ শেষে সূর্যাস্তের আগেই মিনার দিকে রওনা হবেন। সেখানে শয়তানকে পাথর মারার পর পশু কোরবানি দিয়ে মাথার চুল ছেঁটে গোসল করবেন।

পবিত্র কাবা শরিফ তাওয়াফ

এরপর স্বাভাবিক পোশাক পরে মিনা থেকে মক্কায় গিয়ে পবিত্র কাবা শরিফ সাতবার তাওয়াফ করবেন। কাবার সামনে দুই পাহাড় সাফা ও মারওয়ায় আনুষ্ঠানিকতা শেষে আবার মিনায় ফিরে যাবেন হাজিরা। মিনায় যত দিন থাকবেন, তত দিন শয়তানকে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করবেন।

আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা একজন হাজীর জন্য পরম সৌভাগ্যের বিষয়। এই অবস্থান হজের অন্যতম ফরজ। হাজীরা এই দিনটিসহ পুরো হজকার্য সম্পাদনের জন্য আজীবন স্বপ্ন লালন করেন।

আরাফাতের ময়দান দোয়া কবুলের জায়গা। এখানেই আদি পিতা হজরত আদম ও হাওয়া আ: -এর পুনর্মিলন হয়েছিল এবং তাদের দোয়া কবুল হয়েছিল মর্মে বর্ণনা পাওয়া যায়। এই ময়দান রাসূল সা:-এর বিদায়হজের ভাষণের স্মৃতিবিজড়িত।

হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল সা: বলেছেন, এমন কোনো দিবস নেই যেখানে আল্লাহ তায়ালা আরাফাহ দিবস থেকে বেশি বান্দাহকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন এবং আল্লাহ নিশ্চয় নিকটবর্তী হন ও তাদেরকে নিয়ে ফেরেশতাদের সাথে গর্ব করেন, বলেন, ওরা কী চায়? (মুসলিম)। আরেক হাদিসে এসেছে, আল্লাহ তায়ালা আরাফায় অবস্থানরতদের নিয়ে আকাশবাসীদের সাথে গর্ব করেন। তিনি বলেন, আমার বান্দাদের দিকে তাকিয়ে দেখ, তারা আমার কাছে এসেছে আলুথালু ও ধুলায় আবৃত অবস্থায়। (মুসনাদে আহমাদ)

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর