নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :৮ জুলাই, ২০২১ ৪:০৮ : অপরাহ্ণ
লকডাউন বর্তমানে অকার্যকর নিষ্ঠুর রসিকতায় পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, চলমান লকডাউন যেন বেকার হয়ে পড়া কোটি কোটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে খাবারের অভাবে মারার অমানবিক হাতিয়ার।
আজ বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) দুপুরে এক ভার্চুয়াল সাংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, দরিদ্র মানুষের জন্য খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত না করেই দেশব্যাপী কঠোর লকডাউন চাপিয়ে দেয়ার সরকারের হঠকারি সিদ্ধান্তে বিশেষ করে দিন আনে দিন খায় এমন গরীব মানুষেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। নগদ অর্থ সহযোগিতা কিংবা খাদ্য সহায়তা ছাড়া অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের কোটি কোটি দরিদ্র মানুষকে ঘরে আটকে রাখা রীতিমতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব সরকারের প্রতি পাঁচটি প্রস্তাব দেন। এগুলো হলো-
১.দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, সব রাজনৈতিক দল, এনজিও ও সামাজিক সংগঠনের সমন্বয়ে একটি জাতীয় আপতকালীন পরামর্শক কমিটি গঠন করা।
২. দরিদ্র মানুষকে ঘরে রাখার জন্য তাদের ঘরে নগদ অন্তত এককালীন ১৫ হাজার টাকা এবং খাদ্য পৌঁছে দিতে হবে।
৩. মানুষকে বাইরে বের হওয়ার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানা এবং মাস্ক ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
৪. অন্তত ৮০ ভাগ মানুষকে অতি দ্রুত টিকা দিতে হবে। এ জন্য একটি সমন্বিত ও সুনির্দিষ্ট রোড-ম্যাপ প্রণয়ন করে জাতির সামনে উপস্থাপন করতে হবে এবং তা বাস্তবায়ন করতে হবে। অবিলম্বে দেশে টিকা উৎপাদনের কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
৫. বর্তমানে সারাদেশে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সর্বাত্মক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য সারাদেশে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ, আইসিইউ ও করোনা বেড বৃদ্ধিসহ অত্যাবশ্যকীয় চিকিৎসাসামগ্রী ও পর্যাপ্ত চিকিৎসক/স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই পাঁচটি জিনিস করোনা নিয়ন্ত্রণে প্রধান টার্গেট হিসেবে নির্ধারণ করতে হবে। আমাদের জিডিপি’র ৬-৭ শতাংশ অর্থাৎ বর্তমান ৬ লাখ কোটি টাকার বিরাট বাজেটের একটি সামান্য অংশ এ খাতে বরাদ্দ করলেই দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে মানবিক সহায়তা দেওয়া সম্ভব। আমাদের মনে রাখতে হবে, করোনা মহামারির বিরুদ্ধে যে লড়াই সেটা বস্তুত একটি দীর্ঘস্থায়ী লড়াই।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও উপদেষ্টা ইসমাঈল জবিউল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।