প্রতিদিনই যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু। দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় (বুধবার সকাল ৮টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ১৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ১১ হাজার ৬৫১ জনের। করোনাকালে দেশে এটাই একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত।এর আগে ৬ জুলাই ১১ হাজার ৫২৫ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল।
আজ বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৬ হাজার ৮৫০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৬২ শতাংশ। গতকাল শনাক্ত হয়েছিল ১১ হাজার ১৬২ জন। আর মৃত্যু হয়েছিল ২০১ জনের।
এ পর্যন্ত দেশে করোনায় শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ৮৯ হাজার ২১৯ জনে। এ পর্যন্ত করোনায় দেশে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৫ হাজার ৭৯২ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১৯৯ জনের মধ্যে ৬৫ জনই ঢাকার। এছাড়া চট্টগ্রামে ৩৭, রাজশাহীতে ১৫, খুলনায় ৫৫, বরিশালে ৩, সিলেটে ৫, রংপুরে ৯ এবং ময়মনসিংহে ১০ জন মারা গেছেন। মারা যাওয়াদের মধ্যে ১৩৩ জন পুরুষ এবং ৬৬ জন নারী।
বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ১০৭ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৪৭, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ২৮, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ৬, ২১ থেকে ৩০ বছরের ৯ এবং ১১ থেকে ২০ বছরের ২ জন রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন পাঁচ হাজার ৮৪৪ জন। এ নিয়ে দেশে মোট আট লাখ ৫৬ হাজার ৩৪৬ জন করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন।
দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। তারপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। গত বছরের শেষ দিকে এসে সংক্রমণ কমতে থাকে। এ বছরের মার্চ থেকে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য গণপরিবহন চলাচলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। পরে তা আরও দুই দিন বাড়ানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরও কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরু হয়। পরে তা আরও বাড়িয়ে ১৫ জুলাই পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু দেশে এখন সংক্রমণ পরিস্থিতি এপ্রিলের মতো ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে ১ জুলাই থেকে দুই সপ্তাহের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার।