মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা বিএনপি

জিয়াউর রহমানই স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রথম নায়ক, এটা ঐতিহাসিক সত্য: ফখরুল



নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১২ জুন, ২০২১ ৮:৪৫ : অপরাহ্ণ

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ এনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘জিয়াউর রহমানই স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রথম নায়ক, এটা ঐতিহাসিক সত্য। যিনি স্বাধীনতাযুদ্ধ দিয়ে গোটা জাতিকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য। অর্থাৎ একটা অন্ধকার সময়ে আশার আলো দেখিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান।’

আজ শনিবার (১২ জুন) গাজীপুর জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

স্বাধীনতার ঘোষণা সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানতে হবে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নতুন প্রজন্মকে জানতে হবে যে স্বাধীনতার ঘোষণাটা কীভাবে হয়েছে, কে দিয়েছিল, কেন দিয়েছিল। এখানে আলোচনায় এসেছে যে জিয়াউর রহমানকে তো ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের আগে কেউ চিনত না। তাহলে জিয়াউর রহমান কেন আবির্ভূত হলেন? তিনি যে একেবারে আকাশ থেকে শূন্যে পড়ে গেলেন, তা তো নয়।’

ছাত্রদল ও নতুন প্রজন্ম জিয়াউর রহমানকে কতটুকু জানে-এমন প্রশ্ন তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তারা কিন্তু জানে বাংলাদেশের জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান, স্বাধীনতার ঘোষণা করেছেন শেখ মুজিবুর রহমান, যুদ্ধ করেছেন শেখ মুজিবুর রহমান, আওয়ামী লীগই হচ্ছে একমাত্র দল, তারাই শুধু যুদ্ধ করেছে, আর কারও কিছু করার ছিল না এখানে। এ কথাগুলো যে সত্য নয়, এ কথাগুলো যে সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে, একেবারে ইচ্ছে করে নতুন প্রজন্মকে অন্ধকারে রেখে দিতে বিকৃত ইতিহাস রচনা করছে, সেটাকে খণ্ডন করতে হবে, প্রকৃত সত্যকে সামনে নিয়ে আসতে হবে।’

বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম এক দিনের নয় উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম এক দিনের নয়। একেবারে মোগল আমল থেকে পরবর্তীকালে ব্রিটিশ আমল—সব সময় এ অঞ্চলের মানুষ লড়াই করেছে স্বাধীনতার জন্য। প্রীতিলতা, সূর্য সেন, তিতুমীর, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু—তাঁরা যুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করার চেষ্টা করেছেন। পাকিস্তান হওয়ার পর শেরেবাংলা ফজলুল হক থেকে শুরু করে মাওলানা ভাসানী, সোহরাওয়ার্দী, শেখ মুজিবুর রহমান—সবাই কাজ করেছেন, চেষ্টা করেছেন কীভাবে এই দেশকে স্বাধীন করা যায়।’

একাত্তরের ইতিহাস নিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলো পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একটা জনমত তৈরি করে যে পাকিস্তান আমাদের শোষণ করছে। আর পাকিস্তান নয়, এখন আমরা আমাদের নিজেদের একটা দেশ চাই, নিজেদের ভূখণ্ড চাই, নিজেদের সরকার চাই। এ আকাঙ্ক্ষায় মানুষ যুদ্ধের জন্য তৈরি হয়ে গেছে। পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ট্যাংক, মর্টার নিয়ে যখন এই বাংলাদেশের নিরীহ-নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল, তখন কিন্তু কোনো নেতাকে খুঁজে পাওয়া গেল না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কেউ যখন কোথাও দিশা খুঁজে পাচ্ছিল না, সেই সময়ে এই জিয়াউর রহমান, অখ্যাত এক মেজর, যিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটা রেজিমেন্টের কমান্ডার ছিলেন, তিনি বেরিয়ে এসে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বললেন, উই রিভোল্ট। আমরা বিদ্রোহ করছি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। এখন আসুন আপনারা ঝাঁপিয়ে পড়ুন যুদ্ধে। সেখান থেকে লড়াইটা শুরু হয়।’

ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে বেপরোয়া অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হচ্ছে ‘বর্গি’। তারা ক্ষমতায় এলেই দেশে লুটপাট হয়। হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করলেও জবাব দিতে হয় না, খুন করলেও জবাব দিতে হয় না।’

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আসুন অতি দ্রুত আমরা নিজেদের পুরোপুরি সংগঠিত করে ফেলি, নিজেদের ভুল-বোঝাবুঝি, বিভেদগুলো দূর করি। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে জনগণকে একত্র করে কাজ করি।’

গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম, সালাহ উদ্দিন সরকার, কাজী ছাইয়েদুল আলম প্রমুখ।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর