নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :৮ জুন, ২০২১ ৯:০১ : অপরাহ্ণ
এই দেশের শতকরা ৯০ জন মানুষ বিএনপির পক্ষে আছে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘এত ত্যাগ বৃথা যেতে পারে না। সময় হলে আমাদের জয় নিশ্চিত হবে।’
আজ মঙ্গলবার (৮ জুন) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে এই সভার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি।
আওয়ামী লীগ ইতিহাস নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুর বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমানকে আওয়ামী লীগই ছোট করছে। আওয়ামী লীগ জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রচার করে আসছে। স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে জিয়াকে আওয়ামী লীগ খলনায়ক বানানোর চেষ্টা করছে। আমি বলতে চাই, মেজর জিয়াউর রহমান, এ দেশের রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমান যদি সেই দিন স্বাধীনতার হাল না ধরতেন তাহলে এ দেশে কখনো স্বাধীন হতো না। কাজেই জিয়াউর রহমানের সমালোচনা থেকে আওয়ামী লীগের দূরে থাকা উচিত।’
তথ্যমন্ত্রী ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমান তথ্যমন্ত্রী সব মিথ্যে বলেন। তিনি সম্ভবত হিটলারের তথ্যমন্ত্রী ছিলেন। আওয়ামী লীগের এ সমস্ত নেতা-কর্মীরা বারবার মিথ্যে বলতে বলতে একবার সত্য বলে ফেলেন। তাদের মুখ দিয়ে সত্যটা বেরিয়ে আসে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের মধ্যে অনেকে বলে- কী ভাই, কিছু হবে? এটা যখনই মনে করবেন তখনই বুঝবেন যে, আপনি শেষ। একজন মানুষ মরে যায় কখন? সে যখন আশা হারায়। আশা নিয়ে আমাদের থাকতে হবে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান একটা শ্লোগান দিচ্ছেন যে, যদি তুমি ভয় পাও তাহলে তুমি শেষ, আর তুমি যদি রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ।’
নিজের মোবাইল ফোন দেখিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সময় নাই। আমি আপনাদের দেখাতে পারতাম যে, একজন রিকশাওয়ালা কী বলছে? একজন ঠেলা গাড়ি চালায় সে কী বলছে? গাইবান্দাতে একজন সবজি বিক্রি করে সে কী বলছে? এগুলো কোনো কিছু বানানো নয়, তাদের মনের কথাগুলো তারা বলছে যে, এই সরকার আমাদের কী দেখবে? নিজেদের দেখেই তো কুল-কিনারা পায় না। আমাদের তো দেখে না কেউ?’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জেগে উঠতে হবে, জাগাতে হবে। যুবকরা কোথায়? অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিএনপি সবসময় সোচ্চার আছে। এখনও জেল-জুলুম ও নির্যাতন হচ্ছে। আমার নামেও অনেক মামলা রয়েছে, হাজিরা দিয়ে যাচ্ছি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের বয়স এখন অনেকের ৭০-এর উপরে। অনেক সময় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আমাদের আন্দোলন করা সম্ভব হয় না। নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনে যুবকরা বিশেষ ভূমিকা রাখে। আর সমস্ত অন্যায় ও আওয়ামী বিরোধী আন্দোলন যুবকদের শুরু করতে হবে। আন্দোলন শুরু হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে। এরপর সে আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে যায়।’
শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের পথ না করলে পরিণতি ভালো হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যেদিন থেকে ক্ষমতায় এসেছে, তারা সেদিন থেকে জোর করে ক্ষমতায় দখল করেছে। আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে, গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। আর বিএনপি বার বার গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছে। এজন্য দেশের মানুষ সব সময় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিকে ভালোবাসে এবং তারা বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে চায়।’
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।