শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা ইসলামী দল

আল্লামা শফি হত্যা মামলা: সরকারের কাছে শফিপন্থীদের পাঁচ দফা দাবি



নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২ জুন, ২০২১ ২:০৩ : অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামের হাটহাজারী দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার সাবেক প্রধান পরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফি হত্যা মামলায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও বিচারকার্য দ্রুত শেষ করাসহ সরকারের কাছে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে হেফাজত ইসলামের শফিপন্থী অনুসারীরা।

আজ বুধবার (২ জুন) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আহমদ শফির ছোট ছেলে আনাস মাদানী এসব দাবি জানান।

হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা আমির আহমদ শফিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে আনাস মাদানী বলেন, ‘আমরা মনে করি, শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফিকে পরিকল্পিতভাবে শহীদ করে বিভিন্ন কওমি মাদ্রাসা এবং হেফাজতে ইসলামকে একটি চিহ্নিত মহল তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে গভীর ষড়যন্ত্র করছে।’

তিনি বলেন, ‘এসব কর্মকাণ্ডের নেতৃত্বে মূলত হেফাজতের গুটিকয়েক নেতা এবং চিহ্নিত কিছু চরমপন্থী রয়েছে। হাটহাজারী মাদ্রাসায় আন্দোলনের নামে আল্লামা শফির রুম ভাঙচুর এবং তার ওপর মানসিক চাপ, অসৌজন্যমূলক আচরণ, মেডিসিন নিতে বাধা প্রদান, তার চিকিৎসায় ব্যাঘাত ঘটানো-এসবই ছিল তাদের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।’

সংবাদ সম্মেলনে সরকারের কাছে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো-

১. বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে আল্লামা শাহ আমদ শফির ‘অস্বাভাবিক মৃত্যুর’ রহস্য উদঘাটন করে এর সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

২. তার পরিবারের পক্ষ থেকে করা মামলা তদন্তপূর্বক অবিলম্বে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করতে হবে।

৩. আল্লামা শফির পরিবারের সদস্যদের ও তার অনুসারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। যারা মামলা তুলে নেয়ার হুমকি-ধমকি দিচ্ছে তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।

৪. আহমদ শফির রেখে যাওয়া সব দ্বীনি ও সামাজিক অঙ্গনগুলো থেকে তার বিরোধীদের অপসারণ করতে হবে।

৫. অবিলম্বে দেশের সব হিফজ-মক্তব মাদ্রাসা খুলে দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আবদুল হামিদ (মধুপুরী পীর), মুফতি মোহাম্মদ ফয়জুল্লাহ, আহমদ শফির শ্যালক মাইনুদ্দিন, মাওলানা ইউসুফ মাদানী , মাওলানা আনাস মাদানী, মুহাদ্দিস মাওলানা নুরুল ইসলাম জাদিদ প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার বেসরকারী আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ১০৪ বছর বয়সী আল্লামা আহমদ শফি। এর আগের দিন রাতে হাটহাজারী মাদ্রাসায় অবরুদ্ধ হয়ে থাকা আহমদ শফিকে মুমূর্ষ অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে নেয়া হয়েছিল। পরে সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। মৃত্যু সনদে আহমদ শফি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান বলে উল্লেখ করা হয়।

আহমদ শফির মৃত্যুর তিন মাস পর গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাকে ‘মানসিক নির্যাতন করে পরিকল্পিতভাবে হত্যার’ অভিযোগে ৩৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের হয়। আহমদ শফির শ্যালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন এই মামলা দায়ের করেন। পিবিআই মামলাটির তদন্ত করে নরহত্যার দায়ে দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে।

পিবিআইয়ের তদন্তে আসামির তালিকায় নাম উঠে আসে হাটহাজারী দারুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর। তবে আসামির তালিকা বাদ দেওয়া হয় হেফাজতের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে। অন্য অভিযুক্তরা হলেন- নাছির উদ্দিন মুনির, আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মীর ইদ্রিস, হাবিব উল্লাহ, আহসান উল্লাহ, জাকারিয়া নোমান ফয়েজী, নুরুজ্জামান নোমানী, আব্দুল মতিন, মো. শহীদুল্লাহ, মো. রিজওয়ান আরমান প্রমুখ।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর