নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২৫ মে, ২০২১ ৪:১৯ : অপরাহ্ণ
আলোচিত ইসলামী বক্তা মুফতি আমির হামজাকে সন্ত্রাসবিরোধী একটি মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার (২৫ মে) তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক কাজী মিজানুর রহমান আমির হামজাকে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।
এ সময় আসামি পক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করলে রাষ্ট্রপক্ষ তার বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
সোমবার (২৪ মে) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পাটিকাবাড়ী ইউনিয়নের ডাবিরাভিটা গ্রামের বাড়ি থেকে সাদা পোশাকের কয়েকজন লোক আমির হামজাকে তুলে নিয়ে যান বলে তার স্ত্রী তামান্না সুলতানা গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেন ।
তামান্না সুলতানা জানান, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে একটি কালো হাইয়েস গাড়ি বাড়ির সামনে এসে থামে। ছয়–সাতজন পাঞ্জাবী ও পায়জামা পরা ব্যক্তি গাড়ি থেকে নেমে এসে আমির হামজাকে ডাকতে বলেন। তাদের একজনের কাছে রাইফেল ছিল। আমির হামজা ঘর থেকে বের হলে তার হাতে একজন হাতকড়া পরিয়ে ফেলেন। তারা ১০ মিনিটের মধ্যে আমির হামজাকে গাড়িতে তুলে দ্রুত চলে যান।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার আসাদুজ্জামান সন্ধ্যায় আমির হামজাকে সন্ত্রাসবিরোধী একটি মামলায় গ্রেপ্তারের কথা জানান।
গণমাধ্যমকে তিনি জানান, মাহফিলের মাধ্যমে ধর্মের অপব্যাখ্যা ও উগ্রবাদ ছড়ানোর বিষয়ে আমির হামজার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদে মদদ দেওয়া এবং রাষ্ট্রবিরোধী উস্কানির অভিযোগও রয়েছে। এসব বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
কাউন্টার টেরোরিজম সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ মে তলোয়ার নিয়ে সংসদ ভবনে হামলা চালানোর চেষ্টায় সাকিব নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই যুবকের বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় সাকিবসহ আলী হাসান ও মাওলানা মাহমুদুল হাসান গুনবীকেও আসামি করা হয়।
গ্রেপ্তার সাকিবের কাছ থেকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সাকিবের মোবাইলে আলী হাসান উসামা, মাহমুদুল হাসান গুনবী, আমির হামজা, হারুন ইজহার প্রমুখ ব্যক্তির উগ্রবাদী বক্তব্য সংবলিত ভিডিও পাওয়া যায়; যা দেখে সে উগ্রবাদে আসক্ত হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে গত ১৫ মে সিটিটিসির উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেছিলেন, সাকিব এক ইসলামী বক্তার নির্দেশে সংসদ ভবনে হামলার পরিকল্পনা করেছিলো। কয়েকজনের ওয়াজ ও বক্তব্য শুনে জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হয় বলেও জানান তিনি। তবে সেই ইসলামি বক্তা কে ছিলেন, তখন এই বিষয়ে স্পষ্ট করে কোনো তথ্য জানাননি ডিসি সাইফুল ইসলাম। ধারণা করা হচ্ছে সেই ইসলামি বক্তাই হচ্ছেন আমির হামজা।
বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে আমির হামজার দেওয়া বক্তব্য ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত।