নিজস্ব প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২৪ মে, ২০২১ ৪:৪২ : অপরাহ্ণ
বাংলাদেশে চলমান সর্বাত্মক লকডাউন ধীরে ধীরে শিথিল করা হচ্ছে তখন চাপাইনবাবগঞ্জে আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে সাতদিনের লকডাউন জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার মারাত্মক আকার ধারণ করায় সেখানে আলাদা করে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
আজ সোমবার (২৪ মে) দুপুরে জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ তার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ ঘোষণা দেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, চাপাঁইনবাবগঞ্জকে সোমবার মধ্যরাত থেকে সারা বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হবে। লকডাউনের সময় সব দোকানপাট ও যানচলাচল বন্ধ থাকবে। এ সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে কোনো যানবাহন জেলার বাইরে যাবে না। অন্য কোনো জেলা থেকেও কোনো ধরণের পরিবহন চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রবেশ করতে পারবে না। শুধু জরুরি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, ওষুধ এবং চিকিৎসার সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোই খোলা থাকবে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জে সর্বশেষ শনাক্তের হার ৫৫%, অর্থাৎ প্রতি ১শ’টি নমুনা পরীক্ষায় ৫৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, গত ১৮ মে থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনাভাইরাসে সংক্রমণের হার উর্ধ্বমুখী ছিল। কখনো ৫৫%, কখনো তার চেয়ে একটু বেশি, কখনো একটু কম। এমন পরিস্থিতি বিবেচনা করেই এই জেলায় আলাদাভাবে লকডাউনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আপাতত সাত দিনের লকডাউন দিয়েছি। প্রয়োজনে এটি আরো বাড়ানো হবে।
জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাটি ভারত সীমান্তবর্তী হওয়ার কারণে সেখানে সংক্রমণ বেড়ে থাকতে পারে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে যেহেতু সংক্রমণের হার অনেক বেশি, তাই এটা একটা কারণ হতে পারে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ সন্দেহ করছেন, জেলাটি থেকে ধান কাটার প্রচুর শ্রমিক দেশের অন্য জেলাগুলোতে গেছে এবং ঈদের আগে আবার ফিরেছে। এটা একটা কারণ হতে পারে। এছাড়া, জেলাটিতে অনেক মানুষ রয়েছে যারা নির্মাণ কাজের শ্রমিক হিসেবে কাজ করে এবং তারা দেশের অন্য জেলায় যাতায়াত করে থাকে। সেই সাথে ঈদে ঢাকা থেকে অনেক মানুষ গ্রামে ফিরে যাওয়ার কারণেও সংক্রমণ বাড়তে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, দেশে বর্তমানে করোনা সংক্রমণের হার ১৩.৫৬ শতাংশ। আর মৃত্যুহার ১.৫৭ শতাংশ।
দেশে এ পর্যন্ত ৭ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৭ জনের মধ্যে করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ১২,৩৭৬ জন।