প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে কারাগারে পাঠিয়ে সরকার সাংবাদিকদের শিক্ষা দিতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘রোজিনাকে কারাগারে প্রেরণ করে সরকার সব সাংবাদিকদের শিক্ষা দিতে চায় যে, বেশি লাফালাফি করা যাবে না।’
আজ শুক্রবার (২১ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মামলা জামিনযোগ্য কিনা তা বিবেচনায় না নিয়ে ভিডিও ক্লিপ দেখার সময় নিয়েছে আদালত-এমন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে জামিন দিতে দেরি করা হচ্ছে। সরকার বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসন, অর্থসহ সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে।’
প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘রোজিনাকে ধন্যবাদ। কারণ তিনি সাহস নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সরকারের দুর্নীতি তুলে ধরেছেন। এ জন্যই রোজিনার প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সরকারের ক্ষোভ।’
আওয়ামী লীগের লক্ষ্যই বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দেয়া উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্রের মুখোশ নিয়ে কাজ করছে সরকার। গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে সরকার। এখন আমলারাও সরকারি দলের নেতা। এই দানব সরকারকে সরাতে হবে। কোভিড দানব গোটা বিশ্বকে তছনছ করে দিয়েছে। আর বর্তমান সরকার পঞ্চাশ বছরের অর্জন ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘পুলিশের রিমান্ডে হেফাজত নেতা ইকবালের মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমগুলোতে সেভাবে প্রাধান্য দেয়া হয়নি। লোভের কাছে মাথা নত করলে গণমাধ্যমকে বাঁচানো যাবে না।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাবন্দী লেখক মুশতাক আহমেদের (৫৩) মৃত্যু, সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম, রুহুল আমিন গাজীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যতই বন্দী রাখা ও গুম হত্যার মাধ্যমে নির্যাতন করা হোক না কেন, এই সরকারের শেষ রক্ষা হবে না।’
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন। প্রতিদিন বোর্ড বসে তার চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি আমেরিকা ও ইংল্যান্ডের চিকিৎসকদের সাথেও যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। গতকাল চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অক্সিজেন স্যাচুরেশন ভালো হলেও পোস্ট কোভিড পরিস্থিতিতে হার্ট ও কিডনি অ্যাফেক্টেড। উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করলেও সরকার তা দেয়নি। ভয়ের একটি মাত্র কারণ জনগণের সত্যিকারের প্রতিনিধি খালেদা জিয়া।’
জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন।