রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৮ মে, ২০২১ ৮:৩০ : অপরাহ্ণ
খুলনায় কোয়ারেন্টাইনে থাকা এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার এজাহার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বাংলাদেশ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা হলে এজাহারে ৯ এর ১ ধারা অনুযায়ী মামলাটি রুজু করতে হয়। খুলনার ওই নারীকে মেডিকেল পরীক্ষা ও পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেলেও থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে ৯ এর ৫ ধারা উল্লেখ করা হয়েছে।
রোববার (১৬ মে) রাতে খুলনা প্রাইমারি ট্রেনিং ইন্সটিটিউটের (পিটিআই) মহিলা হোস্টেলে কোয়ারেন্টিনে থাকা এক তরুণী ধর্ষণের অভিযোগ এনে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে খুলনা থানায় মামলা করেন। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে এ ঘটনার সত্যতা পেয়ে অভিযুক্ত এএসআই মোখলেছুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে।
কিন্তু মামলার এজাহারের ধারা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আইনজীবীরা। তারা জানান, ৯ এর ১ ধারা অনুযায়ী আসামির সাজা হবে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। আর ৯ এর ৫ ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি ৫ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
এ ধরনের দুর্বল এজাহার আসামিকে বাঁচানোর চেষ্টা উল্লেখ করে অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ৯ এর ১ ধারা অনুযায়ী মামলাটি রজু করা উচিত ছিল। কিন্তু মামলার এজাহারে ৯ এর ৫ ধারা উল্লেখ করা হয়েছে। থানার ওসি কীভাবে এটি করেছেন তা বোধগম্য নয়। ৯ এর ৫ ধারায় যদি এ মামলার চার্জশিট হয়, তাহলে বাদী কোনো অবস্থায় ন্যায় বিচার পাবেন না। তখন আসামিপক্ষের জোরালো আবেদন থাকবে, আসামি দায়িত্ব অবহেলা করেছে, তিনি অবশ্যই ধষর্ণের সঙ্গে জড়িত না।
কোয়ারেন্টাইনে ওই নারী ধর্ষণের শিকার হলেও খুলনা সদর থানার ওসি আশরাফুল আলম গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, পুলিশ হেফাজতে কেউ ধর্ষণ হলে সেটা ৯ এর ৫ ধারায় মামলা হয়। এ ঘটনায় যে ধারা উল্লেখ করা হয়েছে সেটা ঠিক আছে বলে তিনি দাবি করেন।
জানা গেছে, গত ১৩ মে রাত ১টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত খুলনা প্রাইমারি ট্রেনিং ইন্সটিটিউটের মহিলা হোস্টেলে ভারতফেরত কোয়ারেন্টিনে অবস্থানরতদের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন মোকলেছুর রহমান। ডিউটিতে থাকাকালীন উক্ত এএসআই কোয়ারেন্টিনে অবস্থানরত এক তরুণীর কক্ষে প্রবেশ করে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরের রাতে আবারও ওই তরুণীর কক্ষে প্রবেশ করে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় ওই তরুণী চিৎকার করলে এএসআই মাকলেছুর দ্রুত নিচে নেমে যায়। বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরে আসলে প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা মেলে।
জানা যায়, ভুক্তভোগী তরুণী গত ৪ মে ভারত থেকে ফিরলে তাকে খুলনা পিটিআই সেন্টারে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়।