নিজস্ব প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৪ মে, ২০২১ ২:৩১ : পূর্বাহ্ণ
আজ পবিত্র ঈদুল ফিতর। মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসবের দিন। ৩০ দিন সিয়াম সাধনার পর মুসলিম সম্প্রদায় আজ শুক্রবার (১৪ মে) ঈদ উদযাপন করছেন।
ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে উৎসব। মুসলিম সমাজে সুদীর্ঘ কাল ধরে রমজান শেষে ঝাঁকঝমকপূর্ণভাবে ঈদ উদযাপন হয়ে আসছে। প্রতি বছরই ঈদের অন্যতম আকর্ষণ হলো ঈদগাহ মাঠে ঈদ জামাত শেষে একে অপরকে ‘ঈদ মোবারক’ বলে বুকে জড়িয়ে ধরা।
কিন্তু গত বছরের মতো এবারও পবিত্র ঈদুল ফিতরে এমন উৎসবের আবেশ নেই! এবারের ঈদও কাটছে লকডাউনে। ঈদগাহ ময়দানে ঈদের নামাজ হয়নি। মসজিদের ভেতরে দূরত্ব বজায় রেখে নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা। কিন্তু নামাজ শেষে মুসল্লিরা একে অপরের সাথে মেলায়নি না হাত, করেনি কোলাকুলি। দূরত্ব বজায় কেবল কুশলবিনিময় করেন।
একসঙ্গে হয়েও যেনো কেউ একসঙ্গে নেই। কেউ কোথাও বেড়াতে যেতে পারবে না, কেউ কারও বাসায় যাবে না। যার যার বাড়িতে বসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সময় কাটানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে ঈদের উৎসব।
প্রতি বছর ঈদে প্রিয়জনের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করতে বহু কষ্টে শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়ি ছুটে যেতেন মানুষ। কিন্তু গত বছরের মতো এবারও চিরাচরিত সেই দৃশ্য দেখা যায়নি। ঈদ সামনে রেখে লাইনে দাঁড়িয়ে ট্রেনের টিকিট কাটা, দূরপাল্লার বাসে টিকিট কাটার জন্য ছিল না হুড়োহুড়ি। ছিল না যাত্রীবাহী বাস ও ট্রেনের ছাদভর্তি মানুষ। লঞ্চের ডেকের ওপর ঠাসা যাত্রীর কোলাহলও দেখা যায়নি। চোখে পড়েনি মহাসড়কে যানজট। তবে সরকারি বিধিনিষেধ না মেনে ভোগান্তিকে সঙ্গী করে গ্রামের বাড়িতে ছুটে গেছেন অনেক মানুষ।
এবার করোনা মহামারির মধ্যেও বিপণিবিতানগুলো জমজমাট ছিল। শপিংমলগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে কেনাকাটা করেন মানুষ।
ঈদের অনেক কিছুই চলবে চিরাচরিত ধারা মেনে। শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা দেওয়ার পর জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সেই বিখ্যাত গান রেডিও, টেলিভিশনে সম্প্রচার শুরু হয়-‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।’ শুরু হয় চাঁদ রাতেই ঘরে ঘরে ঈদের খুশি, আনন্দ। পরস্পরের সঙ্গে সাক্ষাৎ, ফোনে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়।
গত এক মাস ছিল সংযমের। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের আশায় সিয়াম পালন করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। ইসলাম ধর্মের দুই ঈদের মধ্যে এক মাসের দীর্ঘ সিয়াম সাধনার কারণে ঈদুল ফিতরের জন্য প্রস্তুতি আয়োজন থাকে একটু বেশি। তবে এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেক মানুষের ঘরে আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজন থাকবে না।
প্রতি বছর ঈদ আসে খুশির বার্তা নিয়ে। তবে করোনাকালের এই ঈদ এক বিভীষিকাময় উৎসব হয়ে থাকবে। এই ঈদে বিশ্ব মুসলিমের একটিই প্রার্থনা হোক, বিশ্ব যেন দ্রুত করোনামুক্ত হয়। আর আমরা যেন জীবনের পরবর্তী ঈদগুলো আনন্দের সঙ্গে উদযাপন করতে পারি।