নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :২৮ এপ্রিল, ২০২১ ১:৪৫ : অপরাহ্ণ
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আরও দুইদিন হাসপাতালে থাকতে হবে। তার সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখনো শেষ হয়নি। সব পরীক্ষা শেষে চিকিৎসকদের পর্যালোচনার পর বাসায় নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। এ তথ্য জানিয়েছেন তার চিকিৎসক টিমের প্রধান অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী।
আজ বুধবার (২৮ এপ্রিল) সকালে বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান মেডিক্যাল টিমের প্রধানকে উদ্ধৃত করে এ তথ্য জানান।
শায়রুল কবির খান জানান, মঙ্গলবার রাতে এভার কেয়ারে একটি কেবিনে রাখা হয়েছে খালেদা জিয়াকে। ডা. এফএম সিদ্দিকী জানিয়েছেন, গত এক বছর খালেদা জিয়ার যেসব শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যায়নি, সেগুলো এক-দুইদিনে করা হবে। এই রিপোর্টগুলো পর্যালোচনা করার আবার তাকে বাসায় নেওয়া হবে।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে খালেদা জিয়ার অবস্থা সম্পর্কে অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী বলেন, ম্যাডামের অবস্থা স্থিতিশীল। কোভিডের কোনো উপসর্গ তার নেই। তিনি ভালো আছেন। তার চেস্টের সিটি স্ক্যান করানো হয়েছে। প্রথম যে সিটি স্ক্যান করিয়েছিলাম, তার চেয়ে আজকের রিপোর্ট অনেক ভালো। সেই দিক দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ তিনি সার্বিকভাবে সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
গত ১৫ এপ্রিল রাতে সিটি স্ক্যান করাতে খালেদা জিয়াকে একই হাসপাতালে নেওয়া হয়। তখন সিটি স্ক্যানের প্রতিবেদনে খালেদা জিয়ার ফুসফুসে ন্যূনতম সংক্রমণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছিলেন তার চিকিৎসকেরা।
গত ১০ এপ্রিল বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরদিন ১১ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক প্রতিবেদনে তার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ সনাক্ত হয়। খালেদা জিয়া ছাড়াও তার গৃহকর্মী ফাতেমাসহ বাসার মোট নয়জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
খালেদা জিয়ার করোনা পজিটিভ শনাক্ত হওয়ার পর অধ্যাপক ডা. এফএম সিদ্দিকীরে নেতৃত্বে গুলশানের ‘ফিরোজা’র বাসায় তার চিকিৎসা শুরু হয়।
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। রায় ঘোষণার পর তাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। কিছুদিন পর কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুই বছরের বেশি সময় কারাগারে থাকার পর করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে গত বছরের ২৫ মার্চ পরিবারের আবেদনে তাকে শর্তসাপেক্ষে ৬ মাসের জামিনে মুক্তি দেয় সরকার, যা তিন দফায় বৃদ্ধি করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। খালেদা জিয়ার সঙ্গে শুধুমাত্র তার পরিবারের সদস্য ও ব্যক্তিগত চিকিৎসক ছাড়া অন্য কেউ দেখা করতে পারেন না। ৭৬ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী অস্টিও আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছেন।