নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :২৫ এপ্রিল, ২০২১ ১:১২ : পূর্বাহ্ণ
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় দফায় করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। পরীক্ষার জন্য শনিবার দুপুরে তার গুলশানের বাসা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। রাতে রিপোর্ট আসে। রোববার (২৫ এপ্রিল) রাত ১২ টা ৫০ মিনিটে সংবাদ সম্মেলনে করে এ তথ্য জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যাক্তিগত চিকিৎসক দলের প্রধান অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকী।
অধ্যাপক ডা এফ এম সিদ্দিকী জানান, খালেদা জিয়ার আজকের (শনিবার) পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। আশা করছি ৪-৫ দিনের মধ্যে নেগেটিভ আসবে। বাসার সবার করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। ম্যাডামসহ চারজনের পজেটিভ এসেছে। বাকিদের নেগেটিভ রিপোর্ট আসে।
তিনি বলেন, ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। আগের চেয়ে ভালো আছেন। ম্যাডামের অক্সিজেন স্যাচুরেশন স্বাভাবিক সময়ের মতোই ৯৮-৯৯ সবসময় পাওয়া গেছে। তার খাবারের রুচিও আগের মতো আছে। তার তাপমাত্রা স্বাভাবিক আছে। তার কোনো কফ-কাশি নেই। করোনা সংক্রমণের পর স্বাভাবিকভাবে দুর্বলতা দীর্ঘসময় থাকে।
এর আগে গত বুধবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবন ফিরোজায় গিয়ে তার (খালেদা জিয়ার) শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়া করোনা আক্রান্তের ১৪তম দিন বুধবার শেষ হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা অনেকটা উন্নতি হয়েছে। শরীরে করোনার কোনো উপসর্গ নেই।
গত ১০ এপ্রিল বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আরটি পিসিআর পদ্ধতিতে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরদিন ১১ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক প্রতিবেদনে তার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ সনাক্ত হয়। খালেদা জিয়া ছাড়াও তার গৃহকর্মী ফাতেমাসহ বাসার মোট নয়জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
খালেদা জিয়ার করোনা পজিটিভ শনাক্ত হওয়ার পর অধ্যাপক ডা. এফএম সিদ্দিকীরে নেতৃত্বে গুলশানের ‘ফিরোজা’র বাসায় তার চিকিৎসা শুরু হয়।
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। রায় ঘোষণার পর তাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। কিছুদিন পর কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুই বছরের বেশি সময় কারাগারে থাকার পর করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে গত বছরের ২৫ মার্চ পরিবারের আবেদনে তাকে শর্তসাপেক্ষে ৬ মাসের জামিনে মুক্তি দেয় সরকার, যা তিন দফায় বৃদ্ধি করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। খালেদা জিয়ার সঙ্গে শুধুমাত্র তার পরিবারের সদস্য ও ব্যক্তিগত চিকিৎসক ছাড়া অন্য কেউ দেখা করতে পারেন না। ৭৬ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী অস্টিও আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছেন।