রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪ | ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ১০ জিলকদ, ১৪৪৫

মূলপাতা বিএনপি

খালেদা জিয়া চিকিৎসা নেবেন বাসায়


নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :১৬ এপ্রিল, ২০২১ ১০:১৮ : পূর্বাহ্ণ
Rajnitisangbad Facebook Page

করোনায় আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’তে রেখেই হবে। বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) রাতে খালেদা জিয়ার সিটিস্ক্যান রিপোর্ট খুবই ভালো এসেছে জানিয়ে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানিয়েছেন।

করোনা আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সিটি স্ক্যানের জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৯টার দিকে একটি প্রাইভেটকারে করে বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সিটি স্ক্যান শেষে রাত পৌনে ১১টার দিকে তাকে আবার তার বাসভবন ফিরোজায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন এক ব্রিফিংয়ে বলেন, চিকিৎসকদের পরামর্শে ম্যাডাম বাসায় ফিরেছেন। আমরা ১৪ দিন পর্যন্ত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবো।

খালেদা জিয়া শঙ্কামুক্ত কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, করোনা আক্রান্ত হওয়ার সপ্তম দিনে শঙ্কামুক্ত বলার সময় আসেনি। ১২ থেকে ১৪ দিনে তা বলা যায়।

ডা. জাহিদ বলেন, খালেদা জিয়াকে সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ে রাখা হবে। কারণ করোনায় কালকে কী হবে, তার পরের দিন কী হবে বলা কঠিন। ১৪ দিন পর্যন্ত ক্লোজ মনিটরিংয়ে রাখা হবে। আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া আছে। তার সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে বিএনপির একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, করোনা আক্রান্ত খালেদা জিয়ার ফুসফুসে সংক্রমণের মাত্রা যেটা পাওয়া গেছে তা ৫ শতাংশেরও কম, যা অত্যন্ত সন্তোষজনক।

হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছিলেন তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, ডা. আল মামুন, একজন নার্স ও গৃহপরিচারিকা ফাতেমা।

এর আগে বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের বাসভবনে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে এক ব্রিফিংয়ে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের প্রধান মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এফ এম সিদ্দিকী খালেদা জিয়ার সিটিস্ক্যান করানোর সিদ্ধান্তের কথা জানান।

ডা. এফ এম সিদ্দিকী সাংবাদিকদের জানান, কোভিডের যত সাবধানতা, যত জটিলতা সেগুলো সাধারণত দ্বিতীয় সপ্তাহে হয়। সেজন্য আমরা আরেকটু সাবধানতা অবলম্বন করতে চাই। ম্যাডামের সকালে জ্বর এলেও এখন তার শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে। তার ব্লাড রিপোর্ট ভালো।

গত ১০ এপ্রিল বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আরটি পিসিআর পদ্ধতিতে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরদিন ১১ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক প্রতিবেদনে তার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ সনাক্ত হয়। খালেদা জিয়া ছাড়াও তার গৃহকর্মী ফাতেমাসহ বাসার মোট নয়জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। রায় ঘোষণার পর তাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। কিছুদিন পর কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুই বছরের বেশি সময় কারাগারে থাকার পর করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে গত বছরের ২৫ মার্চ পরিবারের আবেদনে তাকে শর্তসাপেক্ষে ৬ মাসের জামিনে মুক্তি দেয় সরকার, যা তিন দফায় বৃদ্ধি করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। খালেদা জিয়ার সঙ্গে শুধুমাত্র তার পরিবারের সদস্য ও ব্যক্তিগত চিকিৎসক ছাড়া অন্য কেউ দেখা করতে পারেন না। ৭৬ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী অস্টিও আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছেন।

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর