সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ দুই নেতার বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও রয়েল রিসোর্টে ভাঙচুরের ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ সংগঠনটির ৮৩ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) রাতে পুলিশ বাদী হয়ে দুইটি এবং স্থানীয় এক সাংবাদিক বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। তিনটি মামলায় ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামিও করা হয়েছে।
এর আগে স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সহিংসতার ঘটনায় ৫ এপ্রিল হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক খন্দকার আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে পল্টন থানায় এ মামলা করেন।
সোনারগাঁও থানার ওসি হাফিজুর রহমান জানান, পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে। মামলায় হামলা, ভাঙচুর, আগুন দিয়ে সড়ক অবরোধ, সরকারি কাজে বাধা প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া হেফাজত কর্মীদের হাতে নির্যাতনের শিকার স্থানীয় সাংবাদিক হাবিবুর রহমানের দায়ের করা অভিযোগটিও মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। তিন মামলায় হেফাজত নেতা মামুনুল হকসহ এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাত মিলিয়ে ৫৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আসামি শনাক্ত করে নাম ঠিকানা অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এ ঘটনায় এজহারভুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত শনিবার (৩ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়েল রিসোর্টে মাওলানা মামুনুল হককে এক নারীসহ অবরুদ্ধ করে রাখে স্থানীয় লোকজন। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। এ সময় হেফাজত কর্মীরা ওই রিসোর্টে হামলা এবং ভাঙচুর করে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। মামুনুল হককে ছিনিয়ে নেয়ার সময় হেফাজতের উত্তেজিত কর্মী-সমর্থকরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ, উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতার বাড়িতে ভাঙচুর চালায়।
এ ঘটনার পর রোববার রাতে জেলা পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে বদলি ও সোনারগাঁও থানার ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়। পরদিন সোমবার রাতে স্থানীয় এক সাংবাদিককে বাড়ি থেকে বের করে মারধর করেন হেফাজত কর্মীরা। ঘটনার দিন রিসোর্টে সংবাদ সংগ্রহে যাওয়ায় ওই সাংবাদিককে ফেসবুক লাইভে এনে নির্যাতনের মুখে মাওলানা মামুনুল হকের কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করে হেফাজত কর্মীরা।