রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২৭ মার্চ, ২০২১ ১২:৪২ : অপরাহ্ণ
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে। সড়ক ও রেললাইন অবরোধ করেছেন হেফাজত সমর্থক হাটহাজারী দারুল উলূম মাদ্রাসার ছাত্ররা। শনিবার (২৭ মার্চ) সকাল থেকে সড়ক ও রেললাইন অবরোধ করেন তারা। ফলে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে যান চলাচল বন্ধ রযেছে।
আজ শনিবার ফজরের পর থেকে ছাত্ররা হাটহাজারীর আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার সামনে ব্যারিকেড দিয়েছে। এতে উত্তর হাটহাজারী, ফটিকছড়িসহ কয়েকটি অঞ্চলে সড়ক পথের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাটহাজারী সার্কেল) শাহাদাৎ হোসেন রাজনীতি সংবাদকে জানান, মাদ্রাসার সামনে শিক্ষার্থীরা ব্যারিকেড দেওয়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। আজ সকাল থেকেই মাদ্রাসাছাত্ররা সড়কে অবস্থান নিয়েছে। আমরা তাদের সাথে বৈঠক করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।
গতরাতে চট্টগ্রাম-৫ আসনের সাংসদ আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আনোয়ার হোসেন হাটহাজারী মাদ্রাসার দুই শিক্ষক ও হেফাজতের দুই নেতার সঙ্গে হাটহাজারী থানায় বৈঠক করেছেন।
বৈঠক শেষে মাদ্রাসার শিক্ষক মুফতি জসিম উদ্দিন জানিয়েছেন, হাটহাজারী থানার ওসিকে প্রত্যাহার ও ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, আহতদের চিকিৎসা এবং নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিছু দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর দুপুর আড়াইটার দিকে হাটহাজারী মাদ্রাসাছাত্ররা মাদ্রাসার সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি মাদ্রাসা এলাকা অতিক্রম করার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বাধা ডিঙ্গিয়ে হাটহাজারী থানার সামনে যায়। সেখানে মিছিলকারীদের পুলিশ আবার বাধা দেয়।
এ সময় উত্তেজিত মাদ্রাসাছাত্ররা থানা কার্যালয় লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে শুরু করে। এক পর্যায়ে পুলিশ মাদ্রাসাছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি ছুঁড়লে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদের মধ্যে তিন ছাত্র ও একজন পথচারীসহ চারজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
নিহতরা হলেন- হাটহাজারী মাদ্রাসার ছাত্র কুমিল্লা জেলার মো. রবিউল ইসলাম, মাদারীপুর জেলার মো. মেহরাজুল ইসলাম, ময়মনসিংহ জেলার মো. আব্দুল্লাহ মিজান এবং পথচারী হাটহাজারী উপজেলার মো. জসিম।
মাদ্রাসা ছাত্র ও পথচারীসহ ৪ জন নিহত হওয়ার ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ মাদ্রাসাছাত্ররা চার পুলিশ কর্মকর্তাকে অবরোধ করে মারধর করেছে। তাদের মধ্যে এএসপি (শিক্ষানবীশ) প্রবীর ফারাবী ও এসআই মেহেদী গুরুতর আহত। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য সিএমএইচে ভর্তি করা হয়েছে।