শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম, জেলেও গিয়েছিলাম: মোদি



রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২৬ মার্চ, ২০২১ ৬:৪৫ : অপরাহ্ণ

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘জীবনের শুরুর দিকে আন্দোলনগুলির অন্যতম ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াইয়ে সামিল হওয়া। তখন আমার বয়স ছিল ২০-২২ বছর। আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, জেলেও গিয়েছিলাম।’

আজ শুক্রবার (২৬ মার্চ) জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধান অতিথি ছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এ সময় বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানাও উপস্থিত ছিলেন।

নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘আমার সঙ্গে বাংলাদেশের আত্মিক সম্পর্ক আজকের নয়, বরং মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী অনেকেই আমার সঙ্গে এখানে আছেন। আমার জীবনের প্রথম আন্দোলন মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে বাংলাদেশের জনগণের মতো ভারতের জনগণের মধ্যেও স্বাধীনতার আকুলতা ছিল। আমাদের যারা শত্রু তারাও বাংলাদেশের শত্রু।’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ে সমাজের প্রতিটি স্তর থেকে সমর্থন ছিল। ইন্দিরা গান্ধীর চেষ্টা ও তার ভূমিকা সর্বজনবিদিত। অটল বিহারী বাজপেয়ী বলেছিলেন, মুক্তি সংগ্রামে জীবনের আহুতি দেওয়ার জন্য লড়ছি না, ইতিহাসে একটা নতুন দিশা দেওয়ার চেষ্টা করছি। প্রণব’দা বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবন ধৈর্য্য, প্রতিজ্ঞা ও আত্মসংযমের প্রতীক।’

বাংলাকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না উল্লেখ করে মোদী বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। এ অঞ্চলের উন্নতির জন্য ভারত-বাংলাদেশকে একসঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে। দুই দেশের এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের শক্তিশালী গণতন্ত্র রয়েছে। আমরা দেখিয়ে দিয়েছি, পারস্পরিক বিশ্বাসে সমাধান হতে পারে। করোনাকালেও তালমিল রেখে কাজ করেছি। বাংলাদেশে কাজে লাগছে মেড ইন ইন্ডিয়া ভ্যাকসিন।’

মোদী ভাষা শহীদ সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারকে স্মরণ করেন। অনুষ্ঠানে গোবিন্দ হালদারের লেখা ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে, বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা, আমরা তোমাদের ভুলব না’মোদির মুখে বাংলায় এসব গান শুনে সবাই হাততালি দেন।

অনুষ্ঠানে মোদী বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ জোরালো কণ্ঠস্বরে উচ্চারণ করেন।

অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনাকে সঙ্গে নিয়ে নরেন্দ্র মোদির হাত থেকে গান্ধী শান্তি পুরস্কার গ্রহণ করেন শেখ রেহানা।

এ প্রসঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গান্ধী শান্তি পুরস্কার দিতে পারা ভারতের জন্য গর্বের ব্যাপার। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে উপস্থিত থাকা এবং এমন একটি পুরস্কার তুলে দিতে পারা আমার জীবনের সেরা মুহূর্তগুলোর একটি।’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বাংলাদেশের তরুণদের জন্য ভারতে সুবর্ণজয়ন্তী স্কলারশিপের ঘোষণা দেন। তিনি বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের ভারতে গিয়ে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। একইসঙ্গে ভারতে গিয়ে ভারতের ব্যবসায়ীদের শেখাতে এবং শিখে আসার অনুরোধ করেন মোদি।

বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধা জানাই, যিনি সোনার বাংলার স্বপ্নের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করেছেন। মোদি তার বক্তব্যে স্মরণ করেন মুক্তিযুদ্ধের সব শহীদদের।’

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। এর পর শুভেচ্ছা বার্তা দেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর