রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৮ মার্চ, ২০২১ ৫:০০ : অপরাহ্ণ
সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার হবিপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁওয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনা অশনিসংকেত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনা কোনো অশুভ উদ্দেশ্য নিয়ে সংঘটিত হয়েছে কি-না, তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।’
আজ বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক বেলাল আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানান।
উল্লেখ্য, গত সোমবার সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় শানে রিসালাত সম্মেলনে লক্ষাধিক মানুষের সামনে বক্তব্য দেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। সেই সূত্র ধরে পাশের শাল্লা উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের ঝুমন দাস আপন তার ফেসবুকে মাওলানা মামুনুল হককে নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট দেন বলে দাবি করা হয়। একপর্যায়ে ঝুমনকে খুঁজে বের করে গত মঙ্গলবার রাতে পুলিশে দেয় লোকজন। এরপরও লোকজন শান্ত না হয়ে গতকাল বুধবার সকাল থেকে লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নোয়াপাড়া গ্রাম ঘিরে রাখে। পরে তারা বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, বাংলাদেশের মানুষ ধর্ম নিয়ে কোনো হানাহানিতে বিশ্বাসী নয়- উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশ ভয়ংকর দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা বিপন্ন। সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বললেও এই আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার। এ সরকারের আমলে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণের মাত্রা সীমাহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে। আওয়ামী লীগ সরকার যখনই ক্ষমতায় আসে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। বেশ কয়েক বছর ধরে ক্ষমতাসীন দলের লোকদের দ্বারা সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, বাড়িঘর ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ ও দেবালয়ে অগ্নিসংযোগ, সম্পত্তি দখল ইত্যাদির হিড়িক চলছে।’
যারা সংখ্যালঘুদের ওপর নির্মম হামলা চালাচ্ছে তারা মানবজাতির শত্রু উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যুগ যুগ ধরে এদেশে সব ধর্মের মানুষ কোনো ধরনের বিভেদ ছাড়াই নিজ নিজ ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি পালন করে আসছে এবং পারস্পরিক ভ্রাতৃত্বের মধ্য দিয়ে বসবাস করছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের জনগণ এখন ভয়ংকর দুঃসময়ের মধ্যে দিনাতিপাত করছে। ভয়াল পরিবেশের কারণে এদেশে মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা বিপন্ন হয়ে পড়েছে। সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে পারেনি এবং তাদের নিরাপত্তাও দিতে ব্যর্থ হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী মত ও দলের নেতাকর্মীদের দমন ও নির্যাতনে ব্যস্ত থাকার কারণে সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তার বিষয়ে সম্পূর্ণ উদাসীন বিধায় একের পর এক নিরীহ মানুষের ওপরে হামলা, নির্যাতন ও জুলুম অব্যাহত রয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ জনগণের প্রবল সাহসের কাছে কখনোই কোনো অশুভ শক্তির উত্থান সম্ভব নয়। এদেশের সব সম্প্রদায়কে যেকোনো উসকানির মুখে বিভ্রান্ত না হয়ে সাম্প্রদায়িক ঐক্য বিনষ্টকারী দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে এখনই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’