রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ৬:০০ : অপরাহ্ণ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অপরিহার্য। কেউ অসুস্থ হয়ে মারা গেলে সরকারের কিছু করার থাকে না। মৃত্যু কারও কাম্য নয়। সেটাকে ঘিরে বিশৃঙ্খলা করাও উচিত নয়। জাতীয় চার নেতাকে জেলখানায় হত্যা করা হয়েছিল। সেরকম কিছু তো ঘটেনি।’
আজ (২৭ ফেব্রুয়ারি) শনিবার গণভবন থেকে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সুখবর জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় প্রান্তে ছিলেন গণমাধ্যমকর্মীরা।
সংবাদ সম্মেলনে গণভবন থেকে যুক্ত হন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, আওয়ামী লীগ নেতা ও দেশের বিশিষ্টজন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমালোচনা যারা করার তারা তো করবে। যারা বলছে, বলতে থাকুক। দেশের পরিস্থিতিতে এ আইন করা হয়েছে। আমার বয়স তো ৭৫ বছর। স্কুলজীবন থেকে রাস্তায় নামার অভ্যাস আছে। ১৯৬২ সাল থেকে রাজনীতি করে আসছি। দেশের সবাইকে আমার চেনা আছে। কে কি করতে পারে আমার জানা আছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যখন করেছি তখন ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। আইনের অপপ্রয়োগ দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার। আইন নিজ গতিতেই চলবে। কিন্তু আইন নিয়ে অপপ্রচার কাম্য নয়। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ রুখতেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে।’
আল জাজিরার প্রতিবেদন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। কিছু বলারও নেই। একটা চ্যানেল কী করেছে, কী দেখিয়েছে৷ কী বলতে চেয়েছে। এর সত্য-মিথ্যা দেশবাসী যাচাই করবেন। যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানদের ইন্ধন থাকতে পারে এসব ঘটনায়। কেননা, তারা তো থেমে থাকবে না। তাছাড়া আওয়ামী লীগ বিরোধিতার বিষয়টি তো রয়েছেই।’
সংবাদ সম্মেলনে সরকার প্রধান বলেন, ‘তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে এখন উন্নয়নের রোল মডেল বাংলাদেশ। এক যুগ আগের বাংলাদেশ আর আজকের বাংলাদেশ এক নয়। আজকের বাংলাদেশ এক বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আমি একজন নগণ্য সেবক মাত্র।’
অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার কথা কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ গতকাল (২৬ ফেব্রুয়ারি) স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করেছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পূর্ণ যোগ্যতা অর্জন করেছি।’
তিনি বলেন, ‘মাত্র সাড়ে ৩ বছরে যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর এখন সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নত কাতারে বাংলাদেশ। এ কৃতিত্ব এ দেশের আপামর জনসাধারণের। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এই মাইলফলক অর্জন করতে পেরেছি। ঐতিহাসিক এই অর্জন দেশের তরুণ প্রজন্মের প্রতি উৎসর্গ করলাম।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ অবশ্যই আমাদের জন্য গর্বের ও এক ঐতিহাসিক ঘটনা। এটি এমন এক সময়ে হয়েছে যখন আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালন করছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ কৃতিত্ব সম্পূর্ণই দেশের নাগরিকদের।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের ফলে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ একটি প্রত্যয়ী ও মর্যাদাশীল দেশ হিসেবে জায়গা করে নেবে। আমাদের এ অর্জনকে সুসংহত এবং টেকসই করতে হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন, ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের জন্য এটি একটি বিশেষ ধাপ।’