রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ৯:১৫ : অপরাহ্ণ
ক্রিকেটার নাসির হোসেনের নবপরিণীতা তামিমা সুলতানা তাম্মি সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেছেন, চার বছর আগেই সাবেক স্বামী রাকিব হাসানকে ডিভোর্স দিয়ে তিনি বৈধভাবে বিয়ে করেছেন। এসময় তিনি সাংবাদিকের উচিয়ে তালাকের কাগজও দেখান। কিন্তু রাকিব হাসান দাবি করেছেন, তামিমার সাথে তার বিবাহবিচ্ছেদ হয়নি, বিবাহবিচ্ছেদ ছাড়াই তার স্ত্রীকে বিয়ে করেছেন ক্রিকেটার নাসির।
গত ১৪ই ফেব্রুয়ারি ঢাকার একটি রেস্তোঁরায় এক অনুষ্ঠানে তামিমা সুলতানা ও নাসির হোসেন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
আইন অনুযায়ী বিবাহবিচ্ছেদ ছাড়াই একজনের স্ত্রীকে বিয়ে করার অভিযোগে আজ (২৪ ফেব্রুয়ারি) বুধবার দুপুরে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তার নবপরিণীতা তামিমা তাম্মির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন রাকিব হাসান। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন। ৩০ মার্চের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে পিবিআইকে।
রাকিব হাসান তামিমা সুলতানাকে তার স্ত্রী দাবি করে গত কয়েকদিন ধরে গণমাধ্যমে কথা বলে আসছেন। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ব্যাপক আলোচনা চলছে।
মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়, রাকিব ও তামিমা সুলতানা ২০১১ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারি তিন লাখ এক টাকা দেনমোহরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। পরবর্তীতে তাদের ঘরে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয় যার বয়স এখন আট বছর। পেশায় কেবিন ক্রু তামিমা সুলতানা ১০ মার্চ ২০২০ সালে সৌদি আরবে গিয়ে করোনার কারণে আর দেশে ফিরতে পারেননি। তবে এ সময়েও তার সাথে তামিমার যোগাযোগ ছিলো বলে মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়।
মামলার আবেদনে বলা হয়, তামিমা রাকিবের সাথে বিয়ের সম্পর্ক চলমান থাকাবস্থায় নাসিরের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। নাসির বাদীকে ফোন করে জানান যে সম্পূর্ণ বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত এবং তার নিকট তামিমা আছেন। বাদীর সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক চলমান থাকাবস্থায় তামিমার নাসিরকে বিয়ে করা, যা ধর্মীয় এবং রাষ্ট্রীয় আইনে সম্পূর্ণ অবৈধ। আসামির সঙ্গে তিনি অবৈধ বিয়ের সম্পর্ক দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন, যা নিকৃষ্ট ব্যাভিচার।
রাকিব হাসান দুপুরে আদালতে মামলা করার পর বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে এসে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেন তামিমা সুলতানা তাম্মি ও নাসির হোসেন। এ সময় তাদের আইনজীবীও উপস্থিত ছিলেন।
বিয়ে ও বাচ্চা ছাড়া রাকিবের সব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন তামিমা।
তামিমা বলেন, রাকিব হাসানের সঙ্গে ২০১৭ সালে বিবাহবিচ্ছেদ হয় তার। ২০১৯ সাল পর্যন্ত তাদের একমাত্র কন্যা তার কাছেই ছিল। এরপর ২০১৯ সালে রাকিব হাসানের পরিবার শিশুটিকে তাদের বাসায় নিয়ে যায়।
তামিমা আরও বলেন, রাকিব যা করছেন, তা পাবলিক প্ল্যাটফর্ম পাওয়ার জন্য। আমি কোনো ভুল করিনি।
সংবাদ সম্মেলনে নাসির হোসেন বলেন, নিয়ম অনুযায়ী তামিমার বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে এবং তামিমার বিয়ে ও সন্তান সম্পর্কে সব কিছু জেনেই তিনি বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমরা যা করেছি ‘লিগ্যাল ওয়ে’তে, বেআইনি কিছু করিনি। আমরা যথেষ্ট পরিনত, সুতরাং বুঝে শুনে আইনগতভাবে কাজ করেছি।
তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তাদের আইনজীবী জানান, আদালতে তারা সব প্রমাণাদি উপস্থিত করবেন। তারা গণমাধ্যমে মামলার খবর শুনেছেন, এখনো কোনো নোটিশ পাননি।
এখন জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, বিবাহবিচ্ছেদের বিষয়টা নিয়ে কার কথা সত্য, রাকিব নাকি তামিমার? তামিমা তালাকের নোটিস দিয়ে থাকলে রাকিব কেন আইনগত পদক্ষেপ নিলেন? আর তামিমা যদি রাকিবের সাথে বিবাহবন্ধন ছিন্ন না করে থাকেন তাহলে কীভাবে নাসির হোসেনকে বিয়ে করলেন? তামিমা সংবাদ সম্মেলনে তালাকের নোটিস দেখালেও সেটার আইনগত ভিত্তি আছে কিনা তা পিবিআইয়ের তদন্তের মাধ্যমে বেরিয়ে আসবে।