চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের আশঙ্কাই শেষ পর্যন্ত সত্য হলো বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, সাবধানবাণীতে কোনো কাজ হলো না। নির্বাচনের পূর্বে ও নির্বাচনকালে মোট ৪ জনের প্রাণহানি প্রকারান্তরে ৪ টি পরিবারের প্রাণহানির নামান্তর।
আজ বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে চসিক নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি এসব কথা বলেন।
উল্লেখ্য, চসিক নির্বাচনের দুই দিন আগে ইসি মাহবুব তালুকদার ভোটে সহিংসতার আশঙ্কা প্রকাশ করে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
মাহবুব তালুকদার বলেন, চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে যে অরাজকতা দেখা গেছে, তাতে আমি হতাশ। সহিসংতা, কেন্দ্র দখল, পুলিশের গাড়ি ও ইভিএম ভাঙচুর ইত্যাদি ঘটনা এই নির্বাচনকে কলঙ্কিত করেছে। এ ধরনের তাণ্ডব বন্ধ করতে আমাদের সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ খুঁজে পেতে হবে। নির্বাচন প্রক্রিয়ার পরিবর্তন ব্যতীত তা সম্ভব হবে না। এ জন্য দলমত-নির্বিশেষে সকলের ঐকমত্য হওয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন অনিয়মের নির্বাচনের একটি মডেল। নির্বাচনে ভোট পড়েছে শতকরা সাড়ে ২২ ভাগ মাত্র। এত অল্পসংখ্যক ভোট গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নিয়ামক হতে পারে না। ভবিষ্যতে নির্বাচনের এই মডেল অনুসরণ করা হলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বসভায় আত্মমর্যাদা সমুন্নত রাখা যাবে না।
মাহবুব তালুকদার বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে, আমরা সার্বিকভাবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারব না, তা মেনে নেয়া যায় না। আমরা সব নির্বাচনকে যথাযথ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করে গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় যুক্ত হতে চাই। এই পরিস্থিতি নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থাহীনতার পরিচায়ক, যা গণতন্ত্রের জন্য এক অশনিসংকেত।
উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার (২৭ জানুয়ারি) চসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী নৌকা প্রতীকে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট পেয়েছেন । তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট। ৩ লাখ ১৬ হাজার ৭৫৯ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন রেজাউল করিম। নির্বাচনে ভোটের হার ২২ দশমিক ৫২ শতাংশ।